ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা ও কয়েকটি জুস কোম্পানিতে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলাতে ২৮৫ হেক্টর জমিতে আট হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া আবাদ হয়েছে। মিষ্টি কুমড়া বর্তমান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি দরে। এ বছর জেলাতে আবাদ করা মিষ্টি কুমড়ার বাজারমূল্য ১৭১ কোটি টাকা লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে বিজয়নগর উপজেলায়। উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, পত্তন শিবির, বড়পুকুর পাড়, দত্তখলা, গলখলা, লক্ষ্মীমূড়া, মনিপুর গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোসহ প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে মিষ্টি কুমড়া। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পত্তন ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে কুমড়া। জেলার আরো বেশ কয়েকটি উপজেলায় সুইটি, মনিকা, ব্যাংকক, ত্রিপল ৭ ও সোহাগীসহ নানা জাতের মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে।
কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বিজয়নগরে দিন-দিন বাড়ছে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ। ফলন ভালো হওয়ায় এবার সারা দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে জেলার বিজয়নগর উপজেলাসহ আশেপাশের উপজেলার মিষ্টি কুমড়া। অন্যান্য বছর থেকে এ বছর লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এই অঞ্চলের চাষিরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিষ্টি কুমড়া ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে করে বাজারজাত করা হচ্ছে ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বেশ কয়েকটি জুস কোম্পানিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি সপ্তাহে বাজারে মিষ্টি কুমড়া ব্যপক ভাবে বিক্রি শুরু করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমোড়া গ্রামের কৃষক শাহ মো. হারুন জানান, তিন কানি জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে সব মিলিয়ে তার খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হয়েছে। একেক কানি জমির উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ হাজার টাকা। বর্ষার পর শুকিয়ে যাওয়া জমিগুলোতে কুমড়ার বীজ রোপনের ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই কুমড়া বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
নাসিরনগর উপজেলার কৃষক লাল মিয়া বলেন, মিষ্টি কমুড়া চাষ খুবই লাভজনক। তাই এবারো আমি তা চাষ করেছি। পাশপাশি গত শুক্রবার থেকে ভালো দামে বিক্রি শুরু করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, জেলায় এবার ২৮৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। কৃষকদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা ও শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সর্বাত্মক সহযোগিতা ও কৃষকদের পাশে থেকে প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে; কৃষকরা লাভবান হবেন।
আমারবাঙলা/ইউকে