নিজস্ব প্রতিবেদক : শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে শহীদদের স্মরণে আগামী বৃহস্পতিবার ‘শহীদি মার্চ’ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এছাড়া শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) থেকে সারাদেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে এই শহীদি মার্চ শুরু হবে।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা মনে করি, যারা বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে তাদের স্মরণ করার সময়। এজন্য আমরা আগামীকাল শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে সারাদেশে শহীদি মার্চ করব। এতে সব শহীদের পরিবারকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই। আমরা চাই, আগামীকালও সারাদেশে গণজোয়ার নামবে। বিকেল তিনটায় রাজু ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে শহীদি মার্চ শুরু হবে।
সারজিস বলেন, রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এখনো আমাদের ভাইয়েরা ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কাতরাচ্ছে। গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ, কীভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে তার ডকুমেন্টেশন করতে হবে। অনেকে আমাদের বিজয় মিছিল করতে বলছে। কিন্তু যতদিন না নতুন বাংলাদেশ হচ্ছে, মানুষ অধিকার পাচ্ছে ততদিন বিজয় মিছিল করা সম্ভব নয়।
সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ৬ সেপ্টেম্বর থেকে সবাইকে সংগঠিত করার জন্য বিভাগীয় ও জেলা শহরে সফর শুরু করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আমরা জনগণের সাথে কথা বলব, তারা কি চায় সেটা জানব, আমরাও কিছু পরামর্শ দেব। এরপর মানুষ যা চায় আমরা তা বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সারাদেশে সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক জায়গায় এখনো এসব সিন্ডিকেট চলছে। অনেক জায়গায় শুধু মাথা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সিস্টেম একই রয়ে গেছে। আমরা সব ধরনের চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছি।
কাউকে আইন নিজের হাতে না তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম যে বাংলাদেশে চায় সবাইকে সেই বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে হবে। তাই আপনারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনকে সহায়তা করুন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কারও অপরাধ খুঁজে পেলে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। আমরা একটি আইনের শাসনের দেশ চাই। যারাই জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এসময়ে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত ১৬ বছরে দলের সংবিধানকে দেশের সংবিধান হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ একটি ধর্মে পরিণত হয়েছিল। সবকিছুকে আওয়ামীকরণ করা হয়েছিল। এখন এর থেকে বের হওয়ার জন্য সবাইকে এক হতে হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভাজনের সুর দেখা যাচ্ছে। আর কখনো ফ্যাসিজম যেন ফিরতে না পারে সেজন্য সবাইকে এক হতে হবে। যারা ক্ষমতায় আসার আগেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে তারা ক্ষমতায় আসলে কি করতে পারে তা চিন্তার বিষয়। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে পারে এমন গণমাধ্যম আমরা চাই।
আমার বাঙলা/এমআর