নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির হুমকি-ধামকিতে কারো কোনো ভ্রুপেক্ষ নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। রাজপথের বিষয়ে জবাব রাজপথে দেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস ডিঙিয়ে তারা (বিএনপি) যে বিকৃত তথ্য বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর অপপ্রচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল তাদের সে অপচেষ্টা সফল হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং জাতীয় পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের বিদেশে সসম্মানে উচ্চারিত একটি নাম।
ওবায়দুল কাদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মঈন খান সাহেবদের দল ৭৫’র বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে তারপর ৩ নভেম্বর, একুশে আগস্টে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে হামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকার, আল বদরের দল। গর্হিত বক্তব্য দেওয়ার জন্য মঈন খানকে ক্ষমা চাইতে হবে জাতীর কাছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মঈন খান ও তার দলের লোকজন কোথায় ছিল প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়া পাকিস্তানি চর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল কি না সেটাই আজকে প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রথম সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করতেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি প্রমাণ করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে এই দল। বিএনপি এখনো সেই লিগ্যাসি বহন করে চলছে।
তিনি বলেন, একবার একেকটা নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার করছে। আজকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে দেশের কারাগারগুলোতে সর্বমোট ১০ হাজারের মতো বন্দি আছে। অথচ তারা আজকে জাতিসংঘ ও মার্কিন কংগ্রেসমেনের কাছে অপপ্রচার করেছে। মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে তাদেরকে দিয়ে বলাচ্ছে, যে বাংলাদেশে ২৫ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী জেলে আছে, তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে।
সংসদের প্রধান চ্যালেঞ্জ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। বাজার নিয়ন্ত্রণ এ বিষয়টা চ্যালেঞ্জ। সংসদে যারা তারা জনগণের প্রতিনিধি। এ সমস্যাগুলো এখন জনগণের নিত্যদিনের সমস্যা, কাজেই প্রথম চ্যালেঞ্জ এখন এটাই।
ব্যবসায়ীরা কথা রাখবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যবসায়ীরা কথা রাখবে, মিষ্টি কথায় তো চিড়া ভিজে না। কথা যেভাবে বলতে হয় সেভাবেই বলতে হবে আমাদের। যে অ্যাকশনের দরকার সে অ্যাকশন নিতে হবে। শুধু হুমকি ধমকি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। এখানে অ্যাকশন নিতে হবে, কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কারণ আমাদের দেশের যে বাস্তবতা, সবকিছু ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করা যায় না। কিছু কিছু কৌশলেও যেতে হবে এবং সেটা উপলব্ধি করতে হবে। কথায় কথায় কাউকে ধমক দিলে সমস্যা সমাধান হবে না। আমাদের পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে পজিটিভ অ্যাকশনে যেতে হবে।
আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে। তার বিরুদ্ধে একানব্বইটা মামলা রয়েছে। তিনি প্রতিনিয়ত মামলা ফেস করছেন। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য আবার ইলেকশনে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করব। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
স্থানীয় নির্বাচন থেকে দলীয় প্রতীক সরিয়ে দেওয়া এটা কি দলীয় কোন্দল নিরসনের জন্য নাকি যারা বিএনপির নির্বাচনে আসতে পারেনি তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যদি বলি কোন্দল নিরসনের জন্য আমাদের কৌশল নিতে হয়েছে। ইলেকশনে আমরা কৌশল নিয়েছি স্বতন্ত্রদের ইলেকশন করতে দিয়েছি। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিল তারা নির্বাচন করেছে। সে কৌশলের তো বিজয় হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপ-দপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।
এবি/এইচএন