আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শীতকালের অসহনীয় বায়ুদূষণ রোধ করতে দিল্লিসহ আশপাশের ৪ টি রাজ্যকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যগুলো হলো- পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি এস কে কাউল ও বিচারপতি শুভাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ এ ৪ রাজ্যের সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের গাফিলতির কারণে জনগণ মৃত্যু পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর অবসান চাই।
উল্লেখ্য, সাধারণত শীতের শুরু থেকে দিল্লির বাতাসে ভয়াবহ দূষণ ঘটে। এ দূষণের প্রধান কারণ হলো- দিল্লিসংলগ্ন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের গ্রামগুলোতে কৃষকদের খড়বিচুলি পোড়ানো।
শীতের শুরুতে ধান ও গমের ক্ষেতগুলো থেকে ফসল তোলার পর পরবর্তী চাষের জন্য জমিকে প্রস্তুত করতে ধান-গমের গাছের গোড়া পুড়িয়ে দেন কৃষকরা।
৪ রাজ্যের বিশাল জমিতে এ আগুনে ফলে সৃষ্ট বিপুল ধোঁয়া ও ক্ষুদ্র বস্তুকণা দিল্লি বাতাসে ভেসে আসে। ফলে নয়াদিল্লির কুয়াশায় ভারী বাতাসের কারণে সেসব সহজে দূর হয় না। এতে ভয়াবহ বায়ুদুষণের সৃষ্টি হয়।
শীতকালে প্রতি বছর নয়াদিল্লির হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও চোখ জ্বালাপোড়া জাতীয় শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন শত শত রোগী। সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র শীতকালের দূষণের কারণে দিল্লিবাসীরা তাদের আয়ুষ্কাল থেকে গড়ে ১০ বছর হারাচ্ছেন।
যদিও বায়ুদূষণের জন্য কৃষকদেরও দোষ দেওয়ার উপায় নেই। কারণ ফসল তোলার পর জমিতে আগুন দিলে পরবর্তী চাষের জন্য জমি প্রস্তুত হয়। অন্যদিকে এতে খরচও নেই।
শ্রমিক দিয়ে জমি প্রস্তুতের কাজ করা হলে তা বেশ ব্যয় সাপেক্ষ। এ ক্ষেত্রে রাজ্য বা কেন্দ্র থেকে কোনো সহায়তা দেওয়া হয় না।
এই ৪ রাজ্যের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ বলেন, এ মৌসুমে ধান ও গম চাষ করতে হবে- এমন কোনো কথা নেই। অন্য ফসল চাষ করা যেতে পারে বা ধান ও গম তোলার পর গাছের গোড়া জমিতে না পুড়িয়ে জমির সাথে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
কী করা হবে, না করা হবে- তা আপনাদের ব্যাপার। তা আমরা জানি না। তবে দূষণরোধে আপনাদের অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। অতি শিগগিরই তা নিতে হবে। সূত্র: এনডিটিভি
এবি/এইচএন