ক্রীড়া ডেস্ক: রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এক বছর আগের ফাইনালে এই রক্ষণ নিয়েই সাফল্য পেয়েছিলেন বার্সেলোনার কোচ জাভি হার্নান্দেজ। রাইটব্যাকে রোনাল্ড আরাউহো বেশ কয়েক ম্যাচেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে বোতলবন্দী করে রেখেছিলেন। আর দুই গতিশীল উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস এবং রদ্রিগোকে আটকাতে বেছে নিয়েছিলেন হাই প্রেসিং লাইন। কিন্তু তিন টোটকার কোনোটাই কাজে লাগেনি বার্সেলোনার জন্য।
উল্টো এই তিনটিকেই নিজেদের আক্রমণের অস্ত্র বানিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। হাই প্রেসিং লাইনের কারণে গোল খেয়েছে অন্তত দুবার। আরাউহো ভিনিসিয়ুসকে আটকাতে গিয়ে পেনাল্টিই দিয়ে বসেছেন। প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করা বার্সার কাছে ফাইনাল শেষ হয়েছে প্রথমার্ধের বাঁশি বাজার আগেই। ভিনিসিয়ুসের দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ভর করে মৌসুমের প্রথম শিরোপা নিজেদের করে নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ।
ফাইনালের স্কোরলাইন দেখে যতটা একপেশে মনে হচ্ছে, ততটা একপেশে ফাইনাল অবশ্য সৌদি আরবের মাটিতে নেই। অন্তত আক্রমণের ধারা যদি বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ফুটবল গোলের খেলা। গোলের কাজটা করেছে কেবল রিয়াল মাদ্রিদই। চলতি মৌসুমে লম্বা সময় ধরে চোটে আক্রান্ত ভিনিসিয়ুস যেন নিজেকে আবার পুরাতন ছন্দে ফেরালেন এই এক ম্যাচ দিয়েই।
এল ক্লাসিকোতে হ্যাটট্রিক। ম্যাচটায় ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার কতখানি উজ্জ্বল ছিলেন তা বোঝাতে সম্ভবত ছোট এই তথ্যটাই যথেষ্ট। ম্যাচ শুরুর প্রথম সুযোগটা অবশ্য বার্সেলোনাই পেয়েছিল। ৫ মিনিটেই রিয়ালের ত্রাতা হয়ে যান গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন। এরপরই এগিয়ে যায় রিয়াল। জ্যুড বেলিংহ্যামের পাস থেকে ভিনিসিয়ুস যখন বার্সার হাই লাইন ডিফেন্স ভেঙেছেন, তখন সামনে শুধুই গোলরক্ষক। চিরায়ত ব্রাজিলিয়ান ঢঙে তাকে পাশ কাটিয়ে স্কোরলাইন করলেন ১-০।
গোল খেয়ে বার্সেলোনা অবশ্য ধাতস্থ হওয়ার সুযোগটাই পায়নি। এবার আরও একবার সেই হাই প্রেসিং লাইনের ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়েছে রিয়াল। দানি কারভাহালের বলটা রদ্রিগো যখন পেয়েছেন, তখনই সৌদির ভরা গ্যালারি নিশ্চিত ছিল দ্বিতীয় গোলের। সেই বলটা বাড়িয়েছেন ভিনিসিয়ুসের দিকে। তিন বার্সা ডিফেন্ডারের বলের কাছে যাওয়ার সাধ্য ছিল না। স্লাইড করে বল জালে জড়ান ভিনি।
১০ মিনিটে ২ গোল। শেষ অনেকগুলো ম্যাচেই ১ গোলের বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড নেই বার্সার। হারটা চোখ রাঙাচ্ছিল তখন থেকেই। তবে জাভির বার্সা বলেই কিনা, আক্রমণ চলিয়ে গেল আরও কিছুটা সময়। ফেরান তোরেস সুযোগ মিস করলেন। বল ক্রসবারে লাগলো। এরমাঝেই অবশ্য বার্সেলোনা গোল পায়।
৩৩ মিনিটে বার্সার হয়ে ব্যবধান কমান রবার্ট লেভানডফস্কি। বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করে খানিক আশা জাগিয়েছিলেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার। কিন্তু ৩৯ মিনিটে রিয়ালের হয়ে পেনাল্টি আদায় করে নেন ভিনি। ফাউল করেছেন সেই রোনাল্ড আরাউহো। নিখুঁত লক্ষ্যভেদে ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন ভিনিসিয়ুস প্রথমার্ধেই আদায় করে নেন হ্যাটট্রিক। ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় রিয়াল।
এরপর অবশ্য আর বেশি কিছু করার ছিল না রিয়ালের মাদ্রিদের জন্য। বার্সেলোনার আক্রমণ আরও ছন্নছাড়া হয়েছে মাঝের সময়টায়। ৬৪ মিনিটে ৪-১ গোলে লস ব্লাঙ্কোসদের লিড এনে দেন রদ্রিগো। বাকি সময়টা বার্সা পার করেছে গোল না খাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে। এরইমাঝে রোনাল্ড আরাউহোর লালকার্ড ম্যাচ হারের ক্ষতে দিয়েছে বাড়তি প্রলেপ।
এবি/এইচএন