নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৪ সালে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা খরচ করে ‘বঙ্গ’ নামের সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিম ইঞ্জিনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামিরা জুবেরী হিমিকার নিকট থেকে বাংলা অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন বা ওসিআর কিনেছিল। বাংলা ভাষায় হাতে লেখা, টাইপ করা ও ছাপার অক্ষরের লেখাকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য লেখায় রূপান্তর এবং বাংলা প্রকাশনাকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করার জন্য সরকারের এই সফটওয়্যারটি ক্রয় করা হলেও অদ্যাবধি এর কোন ব্যবহার নেই। সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ভাতিজি সামিরা জুবিইরী হিমিকা। বর্তমানে সিনিয়র উপদেষ্টা হিসাবে বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেড চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সফটওয়্যারটি কোথায় আছে, কার দায়িত্বে আছে, কে ব্যবহার করছে, এখন পর্যন্ত এই সফটওয়্যার দিয়ে কি কি কাজ করা হয়েছে এর কোন জবাব কারও জানা নেই। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগ থেকে সবগুলো মন্ত্রণালয়ে বাংলা ওসিআর ব্যবহার করানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং তাদের ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছে। এরপরেও প্রশ্ন কেন এই সফটওয়্যার দেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারছেনা এমন প্রশ্নের জবাবে সামিরা বলেন, আমরা ট্রায়াল দিয়ে দেখেছি আমাদের সফটওয়্যার একশত ভাগ কাজ করে। পৃথিবীতে এমন কোন ওসিআর নেই যা সবসময় শতভাগ সঠিক ফলাফল দেবে। ইংরেজি ওসিআর প্রায় ৩০ বছর ধরে কাজ করে একটা পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। স্ক্যানিং ভাল না হলে এবং পুরাতন টাইপের ফন্ট যেটা কম্পিউটার ধরতে পারছে না সে ক্ষেত্রে ফলাফল ভাল আসবে না।
সফটওয়্যারটি বানাতে টিম ইঞ্জিনের অন্তত ১২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে দাবী করা হলেও মূলত সফটওয়্যারের নামে সরকারের টাকা লোপাট করাই ছিল প্রকল্পটির উদ্দেশ্য। ফলে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিষয়টি আলোচনায় ফিরছে। আগে কেউ এটা নিয়ে কথা বলতে সাহস পায়নি।
সামিরা জুবেইরী হিমিকা বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ‘বঙ্গ’ নামের সফটওয়্যার এখনো পর্যন্ত সরকারকে বুঝিয়ে দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব ব্যবহার করতেন তিনি। সাবেক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে সখ্যতা থাকায় সামিরার দাপট ছিল লক্ষণীয়। সালমান এফ রহমানের ভাতিজি হওয়ার কারণে সামিরার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাহস করে কেউ কোনো কিছু বলতেও পারেনি।
সামিরা "ফিফো টেক" এর স্বত্বাধিকারী তৌহিদ হোসেন আর শমী কায়সার মিলে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য বিভিন্ন কাজ করতেন এবং বিরোধী দলের বিপক্ষে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা গুজব / প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য স্ক্রিপ্ট লিখাতেন। যা বিভিন্ন পত্রিকায় এবং ফেসবুকে দেখা যেতো। প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর মুল হোতাও ছিল এই সামিরা। সামিরা, তৌহিদ ও শমী কায়সার গং দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক হওয়ায় তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য আওয়ামী সরকারের হয়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।