ফেসবুকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ায় গুম হতে হয় তিন তরুণ প্রকৌশলীকে। অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে চোখ বেঁধে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। জঙ্গি তকমা দিয়ে হয় মিথ্যা মামলা, এর পর কারাবাস।
২০২০ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে মোদিকে প্রধান অতিথি করার প্রতিবাদ করে ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন তারা। এতেই এলোমেলো করে দেওয়া হয় তাদের জীবন।
গুম হওয়ার রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন প্রকৌশলী মাসরুর আনোয়ার চৌধুরী। তিনি জানান, ২০২০ সালের পহেলা মার্চ, সকালে রিকশা করে অফিস যাওয়ার সময় হাতিরঝিল পুলিশ প্লাজার পাশে পথ আটকে দাড়ায় একটি সাদা মাইক্রোবাস। ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হতেই তুলে নেওয়া হয় তাকে।
মাসরুর আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমি তখন বলি, আমাকে কোথায় নেওয়া হচ্ছে। আমার বাচ্চা আছে। আমি কী করেছি!’
একই কায়দায় তুলে নেওয়া হয় প্রকৌশলী আসিফ ইবতেহাজ রিবাতকে। বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাওসারকেও।
চোখ বেঁধে তাঁদের নেওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। জিজ্ঞাসাবাদের নামে কখনো চলে শারীরিক নির্যাতন, কখনো আবার মানসিক। এমনকি ভয় দেখানো হয় ক্রসফায়ারের। নানা কায়দায় অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় তাদের।
মাশরুর আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে গাড়িতে তোলার সময় ধরেই নিয়েছিলাম ক্রসফায়ার দেওয়া হবে। মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে ফেলি। এত পিটিয়েছে। জেলে গেলাম। পত্রিকায় দেখলাম গোপন বৈঠক করার।’
ভুক্তভোগীরা জানান, সুযোগ করে তিন প্রকৌশলীকেই নিয়ে সাজানো হয় গ্রেপ্তারের নাটক। মিডিয়া ডেকে দেওয়া হয় জঙ্গি উপাধি। মিথ্যা মামলায় জেলও খাটেন ১০ মাস।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, র্যাবের দুর্নীতিগ্রস্ত কয়েকজন কর্মকর্তা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুনজরে থাকতে অতি উৎসাহী হয়ে এমন গুম ও মিথ্যা জঙ্গি নাটক সাজাতো। ধ্বংস করে দিত অসংখ্য মানুষের জীবন।
আমারবাঙলা/জিজি