সাজু আহমেদ: দ্রোহের কবি, সাম্যের কবি, প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিধাতার অপরূপ সৃষ্টি নারীর চিরচেনা সৌন্দর্যের আলোয় অভিভূত হয়ে বলেছিলেন ‘তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয় সে কি মোর অপরাধ’?
অথবা রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ‘আমারি চেতনার রঙে পান্না হলো সবুজ, চুনি উঠলো রাঙা হয়ে, আমি চোখ মেললুম আকাশে, জ্বলে উঠলো আলো, পুবে পশ্চিমে, গোলাপের দিকে তাকিয়ে বললুম ‘সুন্দর’, সুন্দর হলো সে’।
ঠিক তাই শুধু আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ নয়, প্রকৃতির পাশাপাশি বিধাতার যে কোন সৃষ্টির সৌর্ন্দয্যর তুলনা যে নেই তা দেখবার জন্য সত্যিকারের একটা মন এবং মনের চোখ থাকা চাই। সুন্দর, সৃষ্টিশীল, নান্দনিক যাই বলি না কেন নারীর মধ্যে তা অপারভাবে বিদ্যমান।
সৃষ্টিকর্তার অপার বিস্ময় নারী, সৃষ্টিগুণেই সুন্দর। তার উপর তাতে যদি যোগ হয় সময় এবং আবহাওয়া উপযোগী সাজগোছ তাহলে তো কথাই নেই। চোখ ফেরানো দায়।
বাঙ্গালী নারীরা বিভিন্ন দিবসে প্রকৃতির মত করে নিজেকে মেলে ধরেন সমকালীন পোশাক এবং পরিমিত অলংকারে। তাতে তারা নজর যেমন কাড়েন পুরুষের তেমনি সৌন্দর্যপ্রেমী নারীদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষ। বিশেষ করে, অভিনেত্রী বা মডেলরা সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও সিজনাল পোশাকে মাঝে মাঝেই ধরা দেন মিডিয়ায়। আর ভক্ত অনুরাগীদের মাঝে আলোচনায় আসেন নিজ সৌন্দর্য উপস্থাপনাশৈলিতে। আজ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। বাসন্তী উৎসবের প্রথম দিন। বাঙ্গালীদের এক উৎসবের দিন যেন। দিবসটি উপলক্ষে হলুদ, বাসন্তী শাড়ি আর গাদাসহ নানা ফুলের মালা চুলের খোঁপায় গুজে প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাবেন বিভিন্ন বয়সী নারীরা। ভালবাসার মানুষ পুরুষরা তাদেরকে সঙ্গ দেবেন।
বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে সম্প্রতি ফাল্গুনের বিশেষ ব্রাইডল ফটোশুটে অংশ নেন ৮০ দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকায় রোজিনা। অবশ্য তিনি প্রায় প্রতি বছরেই নানা সিজনাল ফটোশুটে হাজির হন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বাসন্তি সাজে নতুন রূপে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন এই অভিনেত্রী। বাসন্তী শাড়ি, গাদা ফুলের তোড়া আর মালা এবং হালকা গয়নায় নিজেকে অপরূপ রূপে মেলে ধরেছিলেন এই চিত্রনায়িকা। এই ফটোশুটের কারিগড় মনিরা আক্তার দিয়া। সামাজিক মাধ্যমে ছবিগুলো বেশ আলোচনায় এসেছে।
ফেসবুকের পোস্টের কমেন্টস বক্সে এই নায়িকার লুক নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তার অনুরাগীরা। এই বয়সেও তারুণ্যের সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করায় রোজিনার প্রশংসা করছেন তার ভক্ত শুভাকাঙ্খিরা।
একথা অনেকেরই জানা যে বড় পর্দার সফল চিত্রনায়িকা রোজিনা ১৯৭৬ সালে ‘জানোয়ার’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান। এফ কবীর পরিচালিত ‘রাজমহল’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
ক্যারিয়ারে অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন রোজিনা। তার অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘সাহেব’, ‘তাসের ঘর’, ‘হাসু আমার হাসু’, ‘হিসাব চাই’, ‘বন্ধু আমার’, ‘কসাই’, ‘জীবনধারা’ প্রভৃতি।
এদিকে ‘ফিরে দেখা’ নামে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র পরিচালনা করছেন রোজিনা। সরকারি অনুদানের এ সিনেমায় অভিনয় করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, নিরব ও অর্চিতা স্পর্শিয়াসহ অনেকে। রোজিনা নিজেও সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন।
এবি/এইচএন