শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, উপ-উপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা ও কোষাধ্যক্ষ তৌফিক সাঈদ পদত্যাগ করেছেন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইফতেখার মনির তাদের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, উপাচার্য অনুপম সেন বার্ধক্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন অনুপম সেন। যোগাযোগ করা হলে অনুপম সেন জানান, তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে তাদের পদত্যাগের খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানোর পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিজয় মিছিল করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিইসি ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে জিইসি সড়কে যান।
এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পদত্যাগ না করায় তিনটি ক্যাম্পাসে তালা দিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন তারা।
এ সময় অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসিসহ পুরো প্রক্টোরিয়াল বডির সবাই আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করতেন। সরকারের ফরমায়েশি কাজ করতে এসব চেয়ারে তারা বসে ছিলেন। আগে নানা সময় আমাদের ক্যাম্পাস এক জায়গায় করার ব্যাপারে আমরা দাবি দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের দাপট দেখিয়ে আমাদের কথা বাস্তবায়ন করেননি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণের পর ২০০৬ সাল থেকে অনুপম সেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ অন্যান্যদের জোরপূর্বক পদত্যাগের ঘটনা ঘটলেও ব্যতিক্রম ছিল চট্টগ্রামের বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ভিসির পদত্যাগের দাবি করলে বড় একটি অংশ ড. অনুপম সেনের পক্ষে ছিলেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই সমাজবিজ্ঞানী শিক্ষায় অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছিলেন ২০১৪ সালে। তার শিক্ষকতা জীবন পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের।
আমারবাঙলা/এমআরইউ