ক্রীড়া ডেস্ক: আরেকটি বিশ্ব আসরে যখন খেলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ, তখন অনেকটাই নির্ভার মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। প্রধান নির্বাচক থাকাকালীন বিশ্বকাপ এলেই ঘুম হারাম হয়ে যেত তার! এখন সেই দায়িত্বে নেই। তাই তো টিভির সামনে বসে দেখতে পারবেন সাকিব, শান্তদের পারফরম্যান্স। অনায়েসে দিতে পারবেন নিজের মূল্যায়ন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের যা পারফরম্যান্স…তাতে প্রত্যাশা একেবারেই কম সাবেক প্রধান নির্বাচকের। আশায় বুক বাঁধতে দোষ কোথায়? কোটি সমর্থকদের মতো মিনহাজুল আবেদীনও ভালো কিছুর অপেক্ষায়।
রোববার (২৬ মে) এক অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় দলের সাম্প্রতিক সিরিজ নিয়ে কথা বলেছেন মিনহাজুল আবেদীন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারকে কিভাবে দেখছেন?
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু: প্রথম দুইটা ম্যাচ হারা কিন্তু হতাশাজনক। এই পারফরম্যান্সটা কিন্তু কেউ প্রত্যাশা করেনি। প্রথম ম্যাচটা হতে পারতো। কারণ, এমন একটা জায়গা খেলতে গেছি ’৯৬ এর পরে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে খেলিনি। এটা একটা কারণ হতে পারে খেলোয়াড়রা তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচটা খুবই হতাশাজনক পারফরম্যান্স। কালকে ওভারকাম করেছে বিশ্বকাপের আগে আগামী ম্যাচগুলো ভালো খেলতে এই জয়টা সাহজ জোগাবে।
বিশ্বকাপের ঠিক আগে এমন হারকে কিভাকে দেখছেন?
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু: টি-টোয়েন্টি এমন একটা খেলা যেখানে হালকাভাবে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। মোমেন্টাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ইমপ্যাক্টটা সঠিক জায়গায় করছেন কিনা এটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই জায়গায় ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ের কোথাও যদি একটু সমস্যা থাকে তাহলে ওভারকাম করা কঠিন। দলের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে, এরা এক-দেড় বছর অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে। আমি আশা করি খেলোয়াড়রা যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করতে পারে এই বিশ্বকাপে ভালো কিছু একটা দেখার অপেক্ষায় আছি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কোথায়? এই ফলাফলই কি সেই প্রতিচ্ছবি?
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু: টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আমাদের যে স্ট্যান্ডার্ড এই জায়গায় আমরা কিন্তু অনেক পিছিয়ে। এটা কিন্তু মানতে হবে। দেখুন, বাইরের দেশে যে লিগগুলো হয় আমাদের কয়টা খেলোয়াড় খেলে। আমাদের নিচের সারির বা কাছাকাছি মানের দল আফগানিস্তানের ১১-১২ জন বেশিভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে। ওদের অভিজ্ঞতাটা অনেক। আমরাও যাচ্ছি আস্তে আস্তে আমাদের মোস্তাফিজ এবারের আইপিএলে যথেষ্ট ভালো খেলেছে এবং আমাদের আরও যদি ৩-৪ জন খেলোয়াড় গড়ে ৩-৪ টা লিগ খেলতে পারে তাহলে এই সংস্করণে আমরাও শক্তিশালী হবো। তারপরও এই সংস্করণ নিয়ে আগাম কিছু বলতে পারবেন না। একটা দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিকের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে।
দল বদলের সুযোগ ছিল। পরিবর্তন আনার দেওয়ার ছিল কি না?
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু: আমাদের যে ১৫ জনের স্কোয়াড দিয়েছে তারা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। সুতরাং এখানে কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এটা চিন্তা আনাও ঠিক না। কারণ, নির্বাচক প্যানেল এবং টিম ম্যানেজমেন্ট আলোচনা করেই সম্ভাব্য সেরা সাইডটা দাঁড় করিয়েছে। এখন আমাদের সবারই উচিত সম্মিলিতভাবে.... যাতে সেরা পারফরম্যান্সটা বিশ্বকাপে দেখতে চাই।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ শেষের পর বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা?
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু: এখানে দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তে বলা কঠিন। যে দুটো ভেন্যুতে খেলবো সেখানে কিন্তু আমরা পা রাখিনি। অনুশীলন ম্যাচগুলো না দেখে আগাম বলাটা মুশকিল। উইকেটের কন্ডিশন কেমন হচ্ছে, আমাদের ছেলেরা কতটা তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পাচ্ছে। আপনার এটাও মাথায় রাখতে হবে ডালাসে প্রথম ম্যাচটা খেলবেন, তারপরের ম্যাচটা নিউ ইয়র্কে খেলবেন। কন্ডিশনের কিন্তু অনেক পার্থক্য। অনুশীলন ম্যাচগুলো হওয়ার পর আপনি বুঝতে পারবেন দলের ভারসাম্যটা। তখনই আপনি এখানে দাঁড়িয়ে প্রত্যাশার কথা বলতে পারবেন। আমি এখন দেখতে চাই বাংলাদেশ কেমন খেলছে।
এবি/এইচএন