পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার একটি সেনানিবাসে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন হামলাকারীসহ মোট ২১ জন।
নিহতদের মধ্যে হামলাকারী ছয় জন, বাকিরা বেসামরিক এবং হামলার শিকার। এই বেসামরিকদের মধ্যে চার জন শিশু ও দুই জন নারী রয়েছেন। যে ছয় হামলাকারী নিহত হয়েছেন, তাদেরকেও শনাক্ত করা হয়েছে। নিহত এই ছয় জন পাকিস্তানের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্য ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার সময় সেনা নিবাসের ওই এলাকায় দু’টি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি ঢুকে পড়ে। তার পরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী একটি মসজিদ এবং একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হামলায় হতাহতদের নিকটবর্তী ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়ার্টার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের একজন মুখপাত্র পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ১৫ জনই বেসামরিক। এ ছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২৫ জন।
আগের দিন সোমবার খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি মাদ্রাসায় আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছিল। এতে স্থানীয় শীর্ষ তালেবান নেতাসহ নিহত হয়েছিলেন ছয় জন।
যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে আবারো ক্ষমতায় আসে তালেবান গোষ্ঠী। তারপর থেকে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন ঘটেছে পাকিস্তানে। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালের চিত্র ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। সরকারি তথ্য অনুসারে, গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হামলায় নিহত হয়েছেন এক হাজার ছয় শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে পুলিশ ও সেনা সদস্য রয়েছেন ৬৮৫ জন।
হামলার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। পাকিস্তানের তালেবানপন্থি গোষ্ঠী টিটিপি ও তার সহযোগী বিভিন্ন গোষ্ঠী এসব হামলার জন্য দায়ী। টিটিপি আফগান তালেবান গোষ্ঠীর মদতপুষ্ট।
গত বছর জুলাই মাসে টিটিপির অন্যতম সহযোগী হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপ পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সীমান্ত এলাকায় একটি সেনা ছাউনিকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালিয়েছিল। এতে নিহত হয়েছিলেন আট জন সেনা সদস্য ও ১০ জন সন্ত্রাসী।
আমারবাঙলা/এমআরইউ