ছবি-সংগৃহীত
জাতীয়
দক্ষিণবঙ্গে রেল যোগাযোগের দ্বার উন্মুক্ত

পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: অবশেষে পদ্মাপাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে প্রথম হুইসেল বাজিয়ে ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাতায়াত শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে লম্বা হুইসেল দিয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে লোকমোটিভসহ ৬টি কোচের পরীক্ষামূলক ট্রেন। যাত্রী নিয়ে ১০.১৫ মিনিটে কমলাপুর রেলস্টেশন ত্যাগ করে ট্রেনটি।

আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হলো রাজধানী ঢাকা। এতে উচ্ছ্বসিত ওই অঞ্চলের জনসাধারণ। ট্রেনটি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রম চলবে আগামী ১০ অক্টোবর র্পযন্ত।

প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে পদ্মাসেতু পাড়ি দিয়েছে ট্রেনটি। পুরো প্রকল্পে নির্মাণ হতে যাওয়া ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য ১৭২ কিলোমিটার। আগামী ১০ অক্টোবর এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে পদ্মা সেতুর প্যাসেঞ্জার ট্রায়াল ট্রেনের লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালাচ্ছেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করছেন আনোয়ার হোসেন।

অপরদিকে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সাথে আরও উপস্থিত আছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং রেলওয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানিয়েছেনে, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেল পথের কাজ পুরোপুরি শেষ। শুরুতে মাওয়া প্রান্তে মাওয়া স্টেশন, পদ্মা সেতু পার হওয়ার পর পদ্মা স্টেশন এবং ভাঙ্গা জংশন স্টেশন পর্যন্ত রেল চলাচল করবে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় হবে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুনে ফেস দুইয়ের কাজ শেষ হবে বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৪ এপ্রিল স্বপ্নের পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সফল ট্রেন চলাচল করেছে। পাঁচ মাসের মাথা এবার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশের ৮২ কিলোমিটারে প্রথমবারের মতো চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এবং দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের সমন্বয়ে গুণগত মান বজায় রেখে কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের প্রকৌশলী সাদমান শাহরিয়ার জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশের ৮২ কিলোমিটার পথে মাওয়া, পদ্মা, ভাঙ্গাসহ মোট ১০টি স্টেশন রয়েছে। সবগুলোরই প্রায় ৯০ শতাংশের অধিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ অংশের নিমতলি, শ্রীনগর ও মাওয়াতে রয়েছে তিনটি আধুনিক স্টেশন। এগুলোর অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, সর্বোচ্চ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রেল চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে ভায়াডাক্ট। পরীক্ষামূলক চলাচলের জন্য আনা হয়েছে নতুন লোকমোটিভ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, চলতি মাসের শেষ দিকেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের টার্গেট রেখে খুঁটি-নাটি কাজ চলছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার অংশের অগ্রগতি ৯০ শতাংশের বেশি। পদ্মা সেতু ঘিরে দেশের নতুন রেল নেটওয়ার্কের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হতে যাচ্ছে ভাঙ্গা জংশন। এখানকার ১০টি রেললাইনের মধ্যে ছয়টি লাইন চালুর পথে। আর ২২টি ভবনের মধ্যে ২১টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সার্বিক অগ্রগতি ৭০ শতাংশ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানান, ঢাকা থেকে মাওয়ার অংশে দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার, ঢাকার কমলাপুর থেকে রওনা হয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি প্রথমে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছাবে। সেখানে রেলমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবেন। পরে মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ৪২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা অংশে পৌঁছাবে ট্রেনটি। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সাংবাদিকদের রেলমন্ত্রীর ব্রিফিং করার কথা রয়েছে। পরে ভাঙ্গা থেকে সরাসরি ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে ফিরে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের ঢাকা থেকে ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ আগামী বছর চালু হবে। আর পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সফল হলে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের রেলপথে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করবে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ৭টি ইন্দোনেশিয়ান কোচ নিয়ে ৬৬ সিরিজের ডিজেল চালিত আমেরিকান ইঞ্জিন ট্রেনটিকে ঈশ্বরদী থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

এবি/এইচএন

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি ব...

নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি : রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বন্যার পানিতে পড়ে নিখো...

ইসলামী ব্যাংকের ভাটিয়ারী উপশাখা উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পাহাড়তলী...

রিয়েলিটি শো’র প্রধান বিচারক পলাশ মণি দাস

বিনোদন প্রতিবেদক: ‘জীবনের গল্প বলুন, বাড়ি জিতুন’...

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিল ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্...

ট্রলকারীদের জবাব দিলেন মিমি

বিনোদন ডেস্ক: এবারের ঈদে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ৫ট...

হজে গিয়ে ৬০ বাংলাদেশির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদিতে হজ পালন করতে গিয়ে আরও দুই বাংলাদেশ...

ফের আইজিপি পদে আবদুল্লাহ আল-মামুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল হিসেব...

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের সূচি

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের সূচি ঘোষণা...

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন স্টারমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা