ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চান ৬২ শতাংশ ইসরায়েলি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা এবং নাগরিকদের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন নেতানিয়াহু; এমনটি মনে করেন তারা। দেশটির দৈনিক মারিভ পরিচালিত এক জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য।
জরিপে অংশ নেওয়া ইসরায়েলিদের মধ্যে ৬২ শতাংশ জানিয়েছেন— তারা নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চান, ২৯ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা প্রধানমন্ত্রীর পদে নেতানিয়াহুকেই দেখতে চান এবং ১৯ শতাংশ কোনো মন্তব্য করেননি।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির সমর্থকদের পাশাপাশি ইসরায়েলের বর্তমানে ক্ষমতাসীন জোট সরকারভুক্ত দলগুলো এবং বিরোধী দলগুলোর সমর্থকরা ছিলেন। মারিভের জরিপে জানা গেছে, লিকুদ পার্টির ১৮ শতাংশ সমর্থকই নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতার দায়ে নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দেখতে চান। বিরোধী দল এবং সরকারি জোটভুক্ত দলগুলোর সমর্থকদের মধ্যে এই হার যথাক্রমে ৯৩ শতাংশ এবং ৩১ শতাংশ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছিলেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। ভয়াবহ সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন এক হাজার ২০০ জন এবং এর পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস। বস্তুত ইসরায়েলের ইতিহাসে এর আগে এত বড় হামলা ঘটেনি।
হামলার পর গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অভিযানে। টানা ১৫ মাসের ধরে চালানো সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের ব্যাপক চেষ্টায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে গাজায়।
জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির জন্য ৭ অক্টোবরের হামলার পরই সমালোচনা শুরু হয়েছিল নেতানিয়াহুর। তিনি অবশ্য অস্বীকার এ ঘটনার দায়-দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছেন এবং দোষ চাপিয়েছেন সামরিক বাহিনীর ওপর।
ইসরায়েলি জিম্মি এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য তিন পর্বের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে গাজায়; তা সফল হবে বলে বিশ্বাস করেন জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশ। ৩৯ শতাংশ নিশ্চিত যে এই যুদ্ধবিরতি টিকবে না এবং এ বিরতির সফল হবে কিনা— সে সম্পর্কে সন্দিহান ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে আরো জানা গেছে যে যদি এখনই নির্বাচন হয় ইসরায়েলে, তাহলে সেখানকার পার্লামেন্ট নেসেটের ১২০টি আসনের মধ্যে ৫৯টি আসন পাবে বিরোধী দলীয় জোট; অন্যদিকে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সর্বোচ্চ ৫০টি আসনে বিজয়ী হতে পারে। আর আরব পার্টিগুলো পাবে ১০টি আসন।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।
আমারবাঙলা/এমআরইউ