বিনোদন প্রতিবেদক: বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী, পুরান ঢাকার কৃতিসন্তান নাট্যকার, নির্দেশক, মডেল, অভিনেতা এবং একজন দক্ষ সংগঠক জেনেসিস থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নূর হোসেন রানার জন্মদিন বুধবার (৩ জানুয়ারি)। নাট্য আন্দোলন তথা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেড়ে ওঠা এক অভী সংগঠক তিনি। নদীমেখলা বাংলার বহতা নদীর মতোই কখনো নিজেকে ভেঙ্গেছেন আবার গড়েছেন একজন আদর্শ মানুষ হওয়ার ব্রতে। মনকল্প জুড়ে যার স্বপ্ন সর্বদা খেলা করে মানুষের জন্য তথা মানবতার জন্য কিছু করার। আর তাই তার গড়া প্রায় ৩ যুগেরও আগের নাটকের দল ‘জেনেসিস থিয়েটার’ -এর মূলস্লোগান ‘নাটক হোক প্রেম, দ্রোহ, বিশ্ব-মানবতার স্বপক্ষে’। সে লক্ষ্যেই নাটকের মূল আদর্শের বহ্নিশিখায় পুড়ে নিজেকে গড়ছেন আগামীর নিপুন সমরশৈলী হিসেবে। তার সবচেয়ে বড় গুণ দূর্বার সাহসিকতায়, অদম্য কাজকে সহজ করে সমাপ্ত করার মানসিকতা। একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে শুধু নাটকেই নয়, অসংখ্য অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে সাহস উদ্দীপনার প্রেরণা যোগায় সবার প্রিয় নূর হোসেন রানা । যিনি আগামী নির্মাণের ক্লান্তিহীন ছুটে চলা এক নিরলস পথিক। সংস্কৃতি চর্চার আঙিনায় ধুলা মেখে শৈশবের কুয়াশাধোয়া সোনারোদ গায়ে জড়িয়ে যে ক’জন সংগঠক নাট্য আন্দোলনে, শ্লোগানে গলা মিলিয়ে বেড়ে উঠেছেন, তিনি তাঁদের অন্যতম একজন।
নতুন বছরে কাজের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেনেসিস থিয়েটারের দল প্রধান নূর হোসেন রানা বলেন, চলতি মাসে আমাদের দলের নিয়মিত প্রযোজনা, দর্শকদের অত্যন্ত পছন্দের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন কর্মের উপর রচিত, দুই বাংলার একমাত্র মঞ্চ নাটক ‘দামাল ছিলেন নজরুল’ এর দুটি শো ঢাকার বাইরে করতে যাচ্ছি। এছাড়া ছোটদের জন্য দুটি নতুন মঞ্চ নাটকের কাজ চলছে, এ মাসেই শো করবো বলে আশা করছি। কারণ এ সময়ে ছোটদের পড়ালেখার চাপটা অনেকটাই কম থাকে।
নিজ দলের বাইরেও অন্যান্য নাটকের দলের অনেকেই আপনাকে ভীষণ পছন্দ করেন এর পেছনের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখেন আমার ছোটবেলায় নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম স্যারের ফিল্ম সোসাইটিতে আমি যখন কাজ শুরু করি তখন আমিই ছিলাম দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। সে সময় থেকেই সংস্কৃতি অঙ্গনে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হয়েছি, একটু সুযোগের অপেক্ষায় থেকেছি, এভাবে অনেক অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সেখান থেকেই আমার মনে হয়েছে প্রতিভাবান তরুণরা একটু কাজের সুযোগ পেলে ভালো কিছু করতে পারে। তাই আমি বরাবরই নতুনদের উৎসাহ দেয়ার জন্য কোথাও কাজের সুযোগ হলেই তাদেরকে বলি কাজ করতে। এছাড়া ছোটদের নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, কারণ ছোটদের মাঝে আমি আমার নিজের শৈশবকে খুঁজে পাই । ওরা যখন মঞ্চে ছুটে বেড়াই, মনে হয় আমিই যেন ছুটে বেড়াচ্ছি। আর এই সবকিছু মিলিয়েই হয়তো অনেকেই আমাকে পছন্দ করেন, এর বাইরে আর কোন কারণ আছে বলে আমার মনে হয় না।
এ বারের জন্মদিনের আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জন্মদিনের উৎসব আমি কখনোই আয়োজন করে উদযাপনের পক্ষে নই। তবে আমার দলের ছেলেমেয়েরা প্রতিবারই তারা কোনো না কোনো আয়োজন করে আমাকে চমকে দেয়ার চেষ্টা করে। ওদের সাথে ভালোবাসার টানেই থাকতে হয়। তাই এবারও জন্মদিনে পরিবার এবং জেনেসিস থিয়েটারের সাথেই সময়টা কাটাবেন বলে জানান তিনি।