বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন যাবত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের এসব দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন তারা।
শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা বৈষম্য দূরসহ নানা দাবিতে তিন দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন । মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) থেকে দেশের সব সরকারি কলেজ, শিক্ষা বোর্ডসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে৷
আজ বুধবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির আয়োজনে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
দেশের সরকারি কলেজ, মাদরাসা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স পর্যায়ের কলেজসমূহ, অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাসমূহে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডাররা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই কর্মসূচি পালন করছেন।
ফলে সরকারি কলেজে ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধীনে ভর্তি, ফরম পূরণ, সব ধরনের পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। যে কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমার পাশাপাশি অনেককে ক্লাস বন্ধ দেখে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
দাবিগুলোতে বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডারদের পদ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত করে এসব পদে অন্যদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ খসড়া আইনে শিক্ষা ক্যাডার পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া ১৫তম পে-স্কেল বাস্তবায়নে শিক্ষা ক্যাডারদের সর্বোচ্চ পদ রাখা হয়েছে চতুর্থ গ্রেডে। অন্যান্য ক্যাডারদের পদোন্নতি হয় প্রথম গ্রেড পর্যন্ত।
ফলে পদোন্নতি না থাকায় শিক্ষা ক্যাডারদের জন্য রাখা উপরের পদগুলো অন্য ক্যাডার থেকে পূরণ করতে হচ্ছে। এছাড়াও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এই খাতের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে শিক্ষা ক্যাডারদের পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা নতুন ভর্তি হয়েছি। প্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন খুব কড়া বিধায় কর্মবিরতির কথা জানার পরও দেখতে এসেছি। যদি পার্সেন্টেজ মিস হয় তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে। সেজন্য কোনো ঝুঁকি না নিয়ে কলেজ থেকে ঘুরে গেলাম। কর্মবিরতি জানার পরও কলেজে এসেছি। মূলত ঘুরে দেখার জন্য আসা। ভর্তি হওয়ার পর থেকে আনুষ্ঠানিক ক্লাস ছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো ক্লাস আমরা পাইনি। হয়ত কর্মবিরতির পর একাডেমিক ক্লাস শুরু হবে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী জানান, ‘আমাদের দাবিগুলো অযৌক্তিক নয়। আমি মনে করি, এসব ন্যায্য দাবি পূরণে সরকারেরও স্বদিচ্ছা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি।’
প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর একই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি কর্মসূচি ঘোষণা করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
এবি/এইচএন