হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত সানজিদা আক্তার (৩০) নামে এক নারী মারা গেছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। দেশে এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম কোনো রোগী মারা গেলেন। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দেশে এইচএমপিভি শনাক্ত হওয়া কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য এটিই প্রথম। তবে তিনি যে এইচএমপিভির জন্যই মারা গেছেন, এমনটি বলা যাবে না। তার অন্য আরো শারীরিক জটিলতা ছিল, যার জন্য হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
তার আর কী কী জটিলতা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন। এ ছাড়া তার কিডনি সমস্যা ছিল, সেইসঙ্গে তিনি অনেক মোটা ছিলেন, যে কারণে তাকে ভেন্টিলেটরে ওঠানো যাচ্ছিল না। ভাইরাল নিউমোনিয়ার জন্যও সম্ভবত মারা যাননি, অনেকটা সুস্থও হয়ে গেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী জটিলতার জন্য হয়তো সমস্যা হয়েছে।
ডেথ রিভিউ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বজনরা ইতোমধ্যে লাশ নিয়ে গেছেন। তারপরও এটি নিয়ে অধিদপ্তর অথবা মন্ত্রণালয় ব্রিফ করবে। সেই আলোকে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা করবো।
গত ১২ জানুয়ারি সানজিদার এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। ওই নারীর বিদেশ সফরের কোনো ইতিহাস ছিল না। তার স্বামী বিদেশে থাকেন। তবে অতি সম্প্রতি তার স্বামী দেশে আসেননি।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভির বিস্তার ঠেকাতে গত সোমবার বিশেষ নির্দেশনা জারি করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
নির্দেশনায় এইচএমপিভির বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরের যাত্রী, স্টাফ ও দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক রাখা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কারো মধ্যে জ্বর, কফ, শ্বাস ছোট হওয়ার মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনাকারী দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এবং যেসব দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী রয়েছে, সেসব দেশ থেকে যাত্রী আনার ক্ষেত্রেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিমানের ভেতর যদি কারো মধ্যে জ্বর, কফের মতো এইচএমপিভির লক্ষণ দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বিমানবন্দরের হেলথ সার্ভিসে জানাতে হবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ