নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমার সীমান্তের চলমান পরিস্থিতি নয়াদিল্লি সফরে তুলে ধরবেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিয়ানমার ভারতেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র, আবার আমাদেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমরা সবসময় ভারতের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
তিন দিনের সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আজ (মঙ্গলবার) দিল্লি যাওয়ার কথা রয়েছে। সফরে মিয়ানমার পরিস্থিতি তোলা হবে কি না তা জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে গিয়ে আমার সেই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে আমরা সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা করব। যেহেতু মিয়ানমার ভারতেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র, আবার আমাদেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় ভারতের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি। মিয়ানমার থেকে যাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের সহায়তা আমরা বহু আগে থেকেই চেয়েছি। সুতরাং এ বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় উঠবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলবের প্রসঙ্গে বলেন, আজ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছিল। ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে আমাদের দেশে তাদের মানুষদের প্রবেশ... একইসঙ্গে তাদের গোলাবারুদ আমাদের এখানে এসে পড়া ছাড়াও আমাদের দেশের মানুষের আহত-নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে যেখানে আমরা কাজ করছি সেখানে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য— এটা আমরা জানিয়েছি।
মিয়ানমারের সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, সীমান্তের ওপারে যেসব বিজিপি সদস্য পরিবারসহ থাকত, তারা এসেছে। এই বাইরে কেউ নয়। গতকাল এবং আজ মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে ২২৯ জন বিজিপি সদস্য এসেছে। এরপর আরও এসেছে কি না জানি না। তবে আসার সম্ভাবনা আছে।
মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ আর কত ভুগবে? এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আজ আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। এটি গ্রহণযোগ্য নয়, সেটি জানিয়েছি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তার সরকারের কাছে আমাদের কড়া প্রতিবাদের বার্তাটি পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা তাদের নাগরিকদের (চলমান পরিস্থিতির কারণে যারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে) নিয়ে যাবে— সেই মর্মে আমাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় রয়েছে। তারা নৌরুটে তাদের নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।
এদিকে, মিয়ানমারে উদ্ভূত সংঘাত পরিস্থিতিতে নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অজিত দোভালের। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গত সপ্তাহে ঢাকা সফরে এসেছিলেন দোভাল। সেই সময়ই মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আলোচনা হয় বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে এই লড়াই নতুন গতি পেয়েছে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে।
এবি/এইচএন