কলকাতায় শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক বইমেলা । সে দেশে থেকেও বইমেলায় যেতে পারছেন না লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে শহরে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে লেখিকা তসলিমা নাসরিন কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। সেখানেই লেখিকা লিখেছেন-‘কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলা হচ্ছে, যে বইমেলায় আমি একসময় ভালোবেসে যেতাম। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যেতাম বইমেলায় যাওয়ার জন্য। ইউরোপ-আমেরিকা থেকে ছুটে আসতাম ভারতে, শুধু কলকাতা বইমেলার জন্য। আর এখন-আমি ভারতে থেকে ওয়ার্ল্ড বুক ফেয়ারে যাচ্ছি, কেরালা বইমেলা, পুনে বইমেলা, চেন্নাই বইমেলা, রায়পুর বইমেলা, ভুপাল বইমেলা, ভুবনেশ্বর বই মেলা ইত্যাদি নানা রাজ্যের বইমেলায় যাচ্ছি। কিন্তু যেতে পারছি না শুধু কলকাতা বইমেলায়।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘একসময় কলকাতা বইমেলায় ঢুকলে এত মানুষ আমার অটোগ্রাফ নিতে আসত যে, পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হতো। আমার বই কিনতে আসার জন্য ভিড় এত বেশি হতো যে, স্টলের কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিতে হতো। এসব নাকি কলকাতার কিছু বড় লেখকের পছন্দ হয়নি।’
একই সঙ্গে বইমেলায় অংশ নিতে না পারার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। তসলিমা নাসরিন লিখেছেন-‘আমাকে যে কলকাতায় ঢুকতে দেবেন না মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, এ নিয়ে কলকাতার কোনো লেখক-কবির কিছু কি যায় আসে না। বাংলাদেশের একুশে বইমেলায় যে ঢুকতে পারবো না, ঢুকতে পারছি না বত্রিশ বছর। এতে সেখানকার লেখক-কবির কিছু কি যায় আসে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তো কতকাল আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ও দেশের লেখক-কবিরাও অনেককাল নষ্ট। ওদের কথা ধরছি না। এত নষ্টদের মধ্যে এই যে আমি শুদ্ধ মন নিয়ে বেঁচে আছি, এতো হিংসুক আর লোভীদের মধ্যে আমি যে আজও উদার এবং নির্লোভ জীবনযাপন করছি, আমাকে আমারই তো ভালোবাসা উচিত! কিন্তু ওটিই আর করছি কই?’
তসলিমা নাসরিনের দীর্ঘ এই পোস্টে নেটিজেনরা জানিয়েছেন তাদের প্রতিক্রিয়া। এক নেটিজেন লিখেছেন- ‘নিজেকে উজাড় করে ভালোবাসতে হবে। এই যেমন তোমার নির্বাচিত কলম পড়লাম। কতো কিছু উন্মুক্ত করলে সবার সামনে। এমন করে কজন মহাকাব্য পড়ে তার বিচার বিশ্লেষণ করেছে বলতে পারো? যদিও সবার লেখা আমি পড়িনি।’
আরেক নেটিজেন লিখেছেন-আপনি পাঠকের সঙ্গে সৃষ্টির সঙ্গে আছেন, এটি আমাদের বড় পাওয়া! ওসব হিসাব না রাখলেই ভালো! আপনি তো সহস্র হাজার লেখকের চেয়ে পৃথক এবং পথিকৃৎ, আপনি যুগান্তকারী, এটাই যথেষ্ট!’
আমারবাঙলা/জিজি