সাজু আহমেদ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী, নৃত্য শিক্ষক ও সংগঠক সুচেতা লাহিড়ী মিত্র রবিবার ঢাকা আসছেন। ঢাকার গুলিস্তানের অলিম্পিক এসোসিয়েশন ভবন মিলনায়তনে একইবৃন্ত শিল্প-সাহিত্য পরিষদের তৃতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত গুণীজন সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবেন তিনি। অনুষ্ঠানটি রবিবার বেলা ২টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে। নুরুল শিপার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিচারপতি এসএম মুজিবুর রহমান(সুপ্রিমকোট, হাইকোট বিভাগ)। একইবৃন্ত ছাড়াও ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে আরও একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশে আসছেন সুচেতা লাহিড়ী মিত্র। এ প্রসঙ্গে সুচেতা জানান ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। এসব অনুষ্ঠানে তিনি কুচিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন। এছাড়া ঢাকার বাইরে নড়াইলে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তিনি। অনুষ্ঠানে তার পাশাপাশি আমন্ত্রিত হয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড ফান্ডামেন্টাল রাইটস(আইসিএইচএফআর) এর অন্যান্য কর্মকর্তারা । বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে সুচেতা লাহিড়ী মিত্র বলেন, আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ঢাকার একইবৃন্ত শিল্প-সাহিত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। বিশেষভাবে ধনব্যাদ জানাই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা সভাপতি নুরুল শিপার খান দাদাকে। আমাকে এবং আমাদের সংগঠনকে এতো বড়ো মর্যাদা দেয়ার জন্য মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব খাইরুল আলম দাদাভাই ও হাবিব দাদাভাইসহ সকলকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।
সুচেতা লাহিড়ী মিত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিক্ষক। তিনি ভারতের শান্তিনিকেতন থেকে কুচিপুরি নৃত্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার আশুরালি এলাকার বাসিন্দা। তবে তিনি কলকাতার দমদমে বসবাস করেন। তাঁর বেড়ে ওঠা সিউড়িতে। লেখাপড়া করেছেন বীরভূম বিদ্যালয়, মিউনিসিপ্যাল বালিকা বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয়, সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ ( বি۔এ ) বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (বিষয়: শাস্ত্রীয় নৃত্য কুচিপুরি (এম এ )। তার প্রথম নৃত্য শিক্ষা শুরু তিন বছর বয়সে। নৃত্য শিক্ষাদান নৃত্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নৃত্যম কলা কেন্দ্র একাডেমি, মেঘমল্লার অল ইন্ডিয়া কালচারাল একাডেমি। শিক্ষকতা সরস্বতী শিশু মন্দির ও ইউ পি পাবলিক স্কুল। অধ্যাপনা স্বামী বিবেকানন্দ বি এড কলেজ। এছাড়া সংগঠক হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (রাজ্য বিভাগ) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাউন্সিল আই সিএইচএফআর। নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি অসংখ্য অনুষ্ঠান ও উৎসবে অংশ নিয়ে সম্মাননা ও পুরস্কার প্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল ২০১৩ প্রথম স্থান, ইয়ুথ ফেস্টিভাল ২০১৪ প্রথম, উদয়শঙ্কর ডান্স ফেস্টিভ্যাল ২০১৪, আইসিসিআর কলকাতা, ডবিøউবি ২০১৪ প্রথম, যোগেশ মাইম একাডেমি ২০১৭, থিংকার্স এন্ড রইটার্স পিস মিট, কলকাতা ২০১৮, অন্যান্য রাজ্য, খুরদা জেলা ফেস্টিভ্যাল ( ভুবনেশ্বর ) গভমেন্ট অব ওড়িষ্যা ২০১৩, শিশির ষোড়শ উৎসব ভুবনেশ্বর ২০১৪, বালিযাত্রা ফেস্টিভ্যাল ওড়িষ্যা ২০১৪, খুরদা জেলা লোকউৎসব ২০১৪, জাতীয় স্তরে একাদশ জাতীয় যুব উৎসব ( পাটনা ) ২০০৬, দ্বাদশ জাতীয় যুব উৎসব ( পুনে ) ২০০৭, ত্রয়োদশ জাতীয় যুব উৎসব (চেন্নাই) ২০০৮। নৃত্যশিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি যেসব পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নৃত্য সম্মাননা রাজ্য ছাত্র যুব উৎসব পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩, উর্বশী নৃত্য সম্মাননা (নক্ষত্র এন্টারটেন্টমেন্ট ) ২০১৫, পদ্মবিভূষণ সম্মাননা, ড۔ ভ্যাম্পটি চিন্নাসত্যম সম্মাননা ২০১৪, রাওয়া সম্মাননা রাওয়া, মনিপুরী বিশারদ সম্মাননা ১৯৯৪, মনিপুরী নৃত্য সম্মাননা ও পুরস্কার পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কথকনৃত্য সম্মাননা, কথক নৃত্য বর্ধমান বিশ্বদ্যালয় ২০০৪ ও ২০০৭, কথক নৃত্য সম্মাননা ও পুরস্কার ১৯৯৯ (পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ছাত্র উৎসব, ড. বি আর আম্বেদকর নৃত্যরত্ন সম্মাননা ( দিল্লি ) ২০২২, ড. এ পি জে۔ আব্দুল কালাম জাতীয় পুরস্কার ২০২২ প্রভৃতি। এ ছাড়া অজস্র সরকারি বেসরকারি পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি।