ইউক্রেন যুদ্ধ সমাপ্তির শর্ত নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিমিয়ায় মস্কোর দখলদারিত্ব মেনে নিতে কিয়েভ আপত্তি জানালে বুধবার (২৩ এপ্রিল) জেলেনস্কিকে আবারো তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
২০১৪ সালে ক্রিমিয়ায় জোরপূর্বক নিজেদের দখল প্রতিষ্ঠা করে রাশিয়া। তখন থেকেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে আসছে। ক্রিমিয়া দখলের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি মার্কিন শান্তি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন এক সাবেক পশ্চিমা কর্মকর্তা।
এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মঙ্গলবার জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন কখনোই রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়াকে স্বেচ্ছায় বিকিয়ে দেবে না। এটি আমাদের সংবিধান বিরোধী। এখানে তো আলোচনার আসলে কিছু নেই।
জেলেনস্কির বক্তব্যকে উসকানিমূলক উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেছেন, এ ধরনের মন্তব্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা আরো জটিল হয়ে পড়বে।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি আরো বলেছেন, ক্রিমিয়া নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। সেটি বহু আগেই কিয়েভের হাতছাড়া হয়ে গেছে।
গত সপ্তাহে একবার ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রস্তাব মেনে না নিলে ইউক্রেন ইস্যু থেকে সরে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। একই হুমকির পুনরাবৃত্তি করে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন মার্কিন প্রস্তাব মেনে নিক, নইলে যুক্তরাষ্ট্র এসবের মধ্যে আর থাকছে না।
এদিকে, ২০১৮ সালের তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও স্বাক্ষরিত ক্রিমিয়া ঘোষণা যুক্ত করে এক্সে একটি পোস্ট করেছেন জেলেনস্কি। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করে এবং ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা পুনঃস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থানে অটল থাকবে।
ওই পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন তার সংবিধান মেনে চলবে। ক্রিমিয়া বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্ররা আগের অবস্থান বজায় রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তার এই কথায় যেন আরো চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউজের মসনদে বসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করা ছিল ট্রাম্পের অন্যতম নির্বাচনি অঙ্গীকার। জেলেনস্কির কারণে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিলম্ব হওয়াটি ভালোভাবে নিচ্ছেন না তিনি। ট্রাম্প দাবি করেন, তারা ইউক্রেনে হত্যাযজ্ঞ থামানোর চেষ্টা করছেন এবং শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করা অনেকটাই হাতের নাগালে এসে পড়েছে।
জেলেনস্কি এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, দুজন ক্ষমতাবান এবং মেধাবী মানুষকে চুক্তি করতে সম্মত করাতে হবে। সেটি হলেই হত্যাযজ্ঞ থামবে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ