সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আহমেদ আল-শারা ওরফে আবু মুহাম্মদ আল-জুলানির মাথার ওপর এক কোটি ডলারের যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সেটি তুলে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সিরিয়ার বর্তমান নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা বার্বারা লিফ।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএসের প্রধান আল-জুলানির সঙ্গে বৈঠক করেছে মার্কিন প্রতিনিধি দল। দুপক্ষের বৈঠকে সিরিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়।
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস। দেশটির নতুন শাসকদের সঙ্গে প্রথম সরাসরি আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। দলটিতে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তা বার্বারা লিফ, প্রেসিডেন্টের হোস্টেজ বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি রজার কারস্টেনস এবং জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ড্যানিয়েল রুবিনস্টাইন।
পরে বৈঠকের বিষয়ে বিবৃতি দেন বার্বারা। তিনি বলেন এইচটিএসের প্রধানের সঙ্গে তাদের আলোচনা ভালো হয়েছে।
দেশটির কোন গোষ্ঠী যেন সিরিয়া ও বহির্বিশ্বের জন্য হুমকি না হয়ে উঠতে পারে এ বিষয়ে জোর দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। জুলানির মাথার ওপর এক কোটি ডলারের যে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সেটি তুলে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বার্বারা।
এদিকে সিরিয়ায় আইএস সদস্যদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টকম জানায়, তাদের হামলায় নিহতদের মধ্যে গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতাও আছে।
এর আগে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এইচটিএস প্রধান আল-জুলানি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এত কিছুর পর এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত। কারণ এগুলো আগের সরকারকে লক্ষ্য করে আরোপ করা হয়েছিল। অত্যাচারীর সঙ্গে করা আচরণ ভুক্তভোগীর সঙ্গেও করা উচিত নয়।’
তিনি আরো বলেন, এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত রাখা উচিত নয়। এইচটিএস বেসামরিক নাগরিক বা এলাকাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি। তারা নিজেরাই আসাদ সরকারের অপরাধের শিকার।
প্রসঙ্গত, ১২ দিনের ঝটিকা আক্রমণে গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয় এইচটিএস ও আরো কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিমানে করে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার পতনের মধ্য সিরিয়ায় প্রায় ৫৪ বছর পর আসাদ পারিবারের শাননের অবসান হলো।
আমারবাঙলা/এমআরইউ