দোষী সাব্যস্ত হলে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ছেলেকে ক্ষমা করবেন না, এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত ছেলে হান্টার বাইডেনকে ক্ষমা করেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় রবিবার (১ ডিসেম্বর) বাইডেন এই ক্ষমা ঘোষণা করেন বলে বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বাইডেন বলেন, ‘আমি আজ আমার ছেলে হান্টারের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমার অনুমোদন পত্রে স্বাক্ষর করলাম। দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই আমি বলেছিলাম যে বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করব না এবং আমার কথা রেখেছি। তবে আমি দেখেছি শুধুমাত্র পরিবারের নামের কারণে আমার ছেলেকে এককভাবে এবং নির্বাচিত ও অন্যায়ভাবে বিচার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হান্টারের মামলার তথ্য যাচাই করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, শুধু আমার ছেলে হওয়ার কারণে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। আর এটি ভুল।
হোয়াইট হাউজ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত জুনে হান্টার বাইডেন আগ্নেয়াস্ত্র ও কর ফাঁকির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। তবে তার কারাদণ্ড হয়নি। শিগগিরই সেই মামলার চূড়ান্ত সাজার ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে ছেলেকে ক্ষমা ঘোষণা করলেন বাইডেন।
চাইলে যেকোনো অপরাধীকেই ক্ষমা করে দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট। যদিও আগে বাইডেন বলেছিলেন, বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে নিজের ছেলেকে তিনি ক্ষমা করবেন না।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে কর ফাঁকির মামলায় দায় স্বীকার করেন হান্টার বাইডেন। গত জুনে দোষী সাব্যস্ত হন হান্টার বাইডেন। দেশটির ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপতি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার সন্তানের অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার এটিই ছিল প্রথম ঘটনা।
হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে যে তিনটি অভিযোগ আনা হয়, তার দুটি মিথ্যা তথ্য প্রদান সংক্রান্ত। অপরটি, মাদক ব্যবহার কিংবা মাদকাসক্ত থাকা অবস্থায় নিজের অধিকারে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির প্রেসিডেন্ট যেকোনো সাজা মওকুফ করার ক্ষমতা রাখেন।
এদিকে বাইডেনের এমন সিদ্ধান্ত মার্কিন বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে বলে মত অনেকের। এমন সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধানকে নিজেই মনোনীত করেছেন। বিচার বিভাগেও তিনি নিজেই নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এমন ক্ষমা প্রদর্শনের উদাহরণ রয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন কোকেন–সংক্রান্ত মামলায় তার সৎভাইকে ক্ষমা করেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পও তার আগের মেয়াদে কর ফাঁকির মামলায় বেয়াইকে ক্ষমা করেন। তারা সবাই কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন।
গত সেপ্টেম্বর মাসে কর ফাঁকির মামলায় হান্টার বাইডেনের ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া বন্দুক–সংক্রান্ত আলাদা মামলায় তার ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ