চলতি চা মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন অর্জনের লক্ষ্যে চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে নতুন পাতা উত্তোলন বা প্লাকিং করা শুরু করেছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। দোয়া মাহফিল ও চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে পুজা অর্চনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে চা পাতা চয়নের উদ্বোধন করা হচ্ছে বিভিন্ন বাগানে।
এর’ই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১০মার্চ) সকালে মহসিন টি হোল্ডিংস লিমিটেড এর শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগানে দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয় মৌসুমের নতুন চা পাতা চয়ন বা উত্তোলনের।
এ সময় বাগানের স্বত্তাধিকারী মোঃ মহসিন মিয়া মধুসহ বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চা শ্রমিকসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে মোনাজাত পরিচালনা করেন গোবিন্দপুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল গফুর।
নতুন পাতা চয়ন উদ্বোধন শেষে বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রশান্ত কুমার সরকার জানান, বাগানে দোয়া মাহফিল এবং চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে গীতাপাঠসহ পূজা-অর্চনার মাধ্যমে অধীর আগ্রহে এবং পরম আনন্দে চায়ের কচি পাতা দুহাত ভরে উত্তোলন করছেন চা শ্রমিকরা।
তিনি আরো জানান, এ বছর জাতীয়ভাবে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০৩ মিলিয়ন কেজি বা ১০ কোটি ৩০ লক্ষ কেজি নির্ধারন করা হয়েছে। এর মাধ্যে ৯০০ একর জায়গার শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে নয় লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদনের। যদিও বৃষ্টির কারণে এবার নতুন পাতা উত্তোলন কিছুটা দেরি হয়েছে তবুও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটবে না। কারণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু কিছু সেকশনে সেচ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামি কয়েক দিনের মধ্যেই বৃষ্টিপাত হবে, তখন সবুজে সবুজে ভরে যাবে চা বাগান।
জানাযায়, চা বাগানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে চা গাছগুলোর মাথা নির্দিষ্ট মাপ অনুসারে ছেঁটে ফেলা হয়। এ সময় বাগানে চা পাতা উৎপাদন বন্ধ থাকে। তবে চা গাছের পরিচর্যায় ব্যস্থ থাকেন শ্রমিকরা। টানা তিন মাস ধরে অপেক্ষা শেষে চা পাতা উত্তোলন শুরু করা হয় সাধারনত মাচ মার্সের শুরু থেকে। এবার বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে পাতা চয়ন শুরু করতে। তবে অনেক বাগানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃত্রিম বৃষ্টি ঝড়ানোর কারণে নতুন কুঁড়ি গজিয়েছে। এতে অনেক চা বাগানে এখন চোখ জুড়ানো সবুজ আর সবুজ কচি পাতার হাতছানি। তবে বৃষ্টিপাতের পর বদলে যাবে চা বাগানের পরিবেশ ও প্রকৃতি। তৃপ্তির হাসি ফুটবে তখন চা শ্রমিকদের চোখেমুখে।
চা-বাগানের ম্যানেজার পাবেল বলেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবং শ্রমিকদের আন্তরিকতায় এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা চা উৎপাদন সম্ভব হবে। আমাদের বাগানে সব সময়’ই কোয়ালিটি চা উৎপাদন করে থাকি। এবছরও এর ব্যাতিক্রম হবে না ইনশাআল্লাহ।
মহসিন টি হোল্ডিংস লিমিটেড এর স্বত্তাধিকারী মোঃ মহসিন মিয়া মধু বলেন, আমরা চা উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি মনোযোগি কোয়ালিটি চায়ের উপর। আমার স্টাফদের বলেছি কোয়ালিটি চা উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য। চায়ের মান বাড়ানোর জন্য আমরা প্লুনিং করেছি, এবং চা গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যা করিয়েছি। এজন্য এবার আমরা টার্গেট করেছি নয় লাখ কেজি চা উৎপাদনের। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সেটা সম্ভব।
আমারবাঙলা/জিজি