আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখক, তথ্যচিত্র নির্মাতা এবং সাংবাদিক গীতা মেহতা মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের রাজধানী দিল্লিতে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মারা যান তিনি।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএস এবং সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮০ বছর বয়সী গীতা মেহতা মৃত্যুকালে তার ছেলেকে রেখে গেছেন। তার প্রকাশক স্বামী সনি মেহতা আগেই মারা গেছেন। বিশিষ্ট এই লেখক ও সাংবাদিক গীতা মেহতা ছিলেন ভারতের ওড়িশা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং ব্যবসায়ী প্রেম পট্টনায়কের বড় বোন।
আইএএনএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশিষ্ট বিমানচালক ও সবচেয়ে জনপ্রিয় ওড়িয়া নেতাদের একজন বিজু পট্টনায়কের কন্যা কেমব্রিজপড়ুয়া গীতা মেহতা ১৯৭০-৭১ সালে আমেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ সংবাদ দাতা হিসাবে কাজ করেছিলেন।
তার সেই অভিজ্ঞতা বহুল প্রশংসিত তথ্যচিত্র ‘ডেটলাইন বাংলাদেশ’-এ বর্ণনা করেছেন তিনি।
সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ১৯৪৩ সালে দিল্লিতে বিজু পট্টনায়েক এবং জ্ঞান পট্টনায়কের কোলে জন্মগ্রহণ করা গীতা মেহতা ভারত এবং যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ‘কর্মা কোলা’, ‘স্ন্যাক অ্যান্ড ল্যাডারস’, ‘আ রিভার সূত্র’, ‘রাজ’ এবং ‘দ্য ইটারনাল গণেশা’সহ বহু বিখ্যাত বই লিখেছেন।
ছোট ভাই নবীন পট্টনায়কের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন গীতা মেহতা। ভুবনেশ্বরে সফরকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওড়িশার মানুষ সৌভাগ্যবান যে, নবীন পট্টনায়কের মতো একজন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছেন।
গীতা মেহতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, প্রখ্যাত লেখিকা শ্রীমতি গীতা মেহতাজির মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তিনি ছিলেন বহুমুখী একজন ব্যক্তিত্ব।
তিনি লেখালেখির পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি তার জ্ঞান এবং আবেগের জন্য পরিচিত। প্রকৃতি এবং পানি সংরক্ষণের বিষয়েও তিনি অনুরাগী ছিলেন।
প্রতিবেদনে আইএএনএস বলছে, ২০১৯ সালে রাজনৈতিক কারণে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার পর গীতা মেহতা খবরের কাগজে শিরোনাম হয়েছিলেন। সে বছরের লোকসভা নির্বাচনে এ পুরস্কার ভুল বার্তা দিতে পারে বলে সে সময় উল্লেখ করেন তিনি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, ভারত সরকার আমাকে পদ্মশ্রীর জন্য যোগ্য মনে করায় আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, এ সম্মান আমি নিতে পারবো না। এর কারণ হচ্ছে সামনেই লোকসভা নির্বাচন।
এমন সময়ে এ সম্মান মানুষের মাঝে ভুল বার্তা দিতে পারে। তাতে ভারত সরকার এবং আমি ২ জনেই বিব্রত হবো, যা আমার পক্ষে আরো বেশি দুঃখজনক।
এবি/এইচএন