ফিলিস্তিনে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে পৌঁছানোর আলোচনা ৯০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোচনায় জড়িত একজন সিনিয়র ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার বিবরণ বিবিসিকে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের দৈর্ঘ্য বরাবর কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত একটি বাফার জোন তৈরির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। ইসরায়েল এই এলাকায় সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমস্যাগুলো সমাধানের সঙ্গে সঙ্গে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিন ধাপের যুদ্ধবিরতিতে উভয়পক্ষ সম্মত হতে পারে। চুক্তিতে যুদ্ধবিরতির তিন ধাপের প্রথমটিতে মুক্তি পাওয়া প্রতিটি নারী সৈনিকের জন্য ২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যদিও বন্দীদের নাম এখনো সম্মত হয়নি, তবে ইসরায়েলে ২৫ বছর বা তার বেশি সময় ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন এমন প্রায় ৪০০ জনের নাম থেকে বেছে ওই তালিকা করা হবে। এর মধ্যে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘৌতিকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে না; যার মুক্তিতে ইসরায়েলের ভেটো দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চুক্তি প্রস্তাবনায় ইসরায়েলি জিম্মিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। গাজায় এখনো বন্দি ৯৬ জিম্মির মধ্যে ৬২ জন জীবিত আছেন বলে মনে করছে ইসরায়েল। এ ছাড়া গাজার বেসামরিক নাগরিকরা মিশরীয়/কাতারি তদারকির ব্যবস্থার অধীনে উত্তরে ফিরে যেতে পারবে এবং প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সাহায্য উপত্যকায় আসবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। তিন-পর্যায়ের পরিকল্পনার চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৪ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি দেখতে পাবে বিশ্ব। গাজা উপত্যকা টেকনোক্র্যাটদের একটি কমিটি দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হবে, যাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকবে না, কিন্তু সবার সমর্থন থাকবে।
মূলত সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশর তাদের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করে। এ সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য উভয়পক্ষের সর্বোচ্চ ইচ্ছার কথা সামনে আসে। এর আগে গত অক্টোবরের মাঝামাঝি আলোচনার মাধ্যমে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হলেও হামাসের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়।
হামাস এবং অন্য দুটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী বলেছে যে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি হয়ে উঠেছে শুধু যদি ইসরায়েল নতুন শর্ত আরোপ করা বন্ধ করে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) একটি টেলিগ্রাম বিবৃতিতে গ্রুপটি বলেছে, তারা প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) প্রতিনিধিদের সাথে চলমান আলোচনার প্রচেষ্টা নিয়ে শুক্রবার কায়রোতে একটি বৈঠক করেছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ