আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে চালানো সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে প্রস্তাব উত্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল নিরাপত্তা পরিষদে এ প্রস্তাব উত্থাপন ও এর ওপর ভোটগ্রহণ হবে।
এর আগে শনিবার (১৪ অক্টোবর) জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার উপ-প্রতিনিধি দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি রয়টার্সকে বলেন, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এ প্রস্তাবের খসড়া অনুলিপি নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বেলা ৩ টার দিকে এক পৃষ্ঠার সেই লিখিত প্রস্তাবটির ওপর ভোটগ্রহণ হবে।
প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে বেসামরিক লোকজনকে হত্যায় নিন্দার পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েল ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মুক্তিসহ মানবিক সহায়তা করিডোর গঠন এবং বেসামরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য সেফ প্যাসেজের দাবিও করা হয়েছে।
তবে রাশিয়ার এ প্রস্তাবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের নাম উল্লেখ করা হলেও হামাসের নাম সরাসরি নেওয়া হয়নি।
জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী ও ১০ অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ন্যূনতম ৯ সদস্য রাষ্ট্র যদি প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন যদি ভেটো বা আপত্তি না জানায়, সেক্ষেত্রে প্রস্তাবটি পাস হয়ে যাবে।
প্রেসঙ্গত, প্রায় ২ বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর ভোরে গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়ে হামাস।
সূর্য ওঠার আগেই দেশটির দক্ষিণাংশের সীমান্ত বেড়া বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ঐ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে শত শত হামাস যোদ্ধা।
তাদের এ হামলায় প্রথম দিনেই নিহত হয়েছেন কয়েকশ ইসরায়েলিসহ অন্যান্য দেশের নাগরিক, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এছাড়া দেড় শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাস। ঐ জিম্মিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি।
তবে প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে হামলার শুরুর দিকে কিছুটা অপ্রস্তুত থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা কাটিয়ে পূর্ণ শক্তিতে যুদ্ধের ময়দানে নামে ইসরায়েল।
আক্রমণের প্রথম দিন থেকেই তারা গাজায় বিমান হামলা শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানায়, শিগগিরই বিমান অভিযান বন্ধ করে গাজায় স্থল অভিযান শুরু হবে। এ অভিযানের চুড়ান্ত প্রস্তুতির কাজও শেষ হয়ে এসেছে।
স্থল অভিযান পরিচালনার জন্য গাজার বেসামরিক লোকজনকে উপত্যকার দক্ষিণ দিকে মিসর সীমান্তে চলে যাওয়ার নির্দেশন দিয়েছে তারা।
রোববার (১৫ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় গত এক সপ্তাহে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৩২৯ জনে।
এছাড়া এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৮৭১৪ জন। এই হতাহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও নারী রয়েছেন।
গাজা ছাড়াও ফিলিস্তিনিদের পশ্চিম তীরেও সংঘাত চলছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১১০
এবি/এইচএন