ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন; যার মধ্যে পাঁচটি শিশু রয়েছে।
গাজার চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, গাজার আল-মাওয়াসির ‘নিরাপদ অঞ্চলের’ তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ শিশু নিহত হয়।
অন্যদিকে জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন আটজন।
কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক ও ফিলিস্তিনি তথ্যকেন্দ্রের তথ্যমতে, গাজার আটক চিকিৎসক হুসসাম আবু সাফিয়ার মা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী গত ২৭ ডিসেম্বর উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালায়। অভিযানকালে হাসপাতালটির পরিচালক আবু সাফিয়াকে আটক করে তারা।
হামাসের হয়ে কাজ করার অভিযোগে আবু সাফিয়াকে আটক করা হয়। ৫১ বছর বয়সী এই শিশুরোগবিশেষজ্ঞ অবরুদ্ধ হাসপাতালটির ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনা ভিডিও বার্তায় দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন। আটকের পর তাকে অজ্ঞাত স্থানে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে মঙ্গলবার উত্তর গাজার শাতি শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা আল-জাজিরাকে বলেছেন, শিবিরে অবস্থানরত পরিবারগুলো যখন ঘুমাচ্ছিল, তখন বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। একটি ভবন নিশানা করে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় ভবনটির আশপাশের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির একটি বাড়িতে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনী বোমা হামলা চালায়। এই হামলায় ১৫ দিন বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেক মানুষ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৫ হাজার ৮৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন এক লাখ নয় হাজার ১৯৬ জন।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আমারবাঙলা/এমআরইউ