ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভোর থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জন নিহত এবং আরো ৫৩ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সর্বশেষ হতাহতের ঘটনার পর গাজায় ইসলায়েলি বাহিনীর অভিযানের জেরে নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৪ হাজার ৩৩০ জনে। আর এক লাখ চার হাজার ৯৩৩ জন আহত হয়েছেন।
তবে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ ভবনের ধ্বংস্তূপের তলায় অনেকে চাপা পড়েছেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবলের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, উল্লেখ করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির একদিন পরই গাজায় এমন ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে তেলআবিব। এদিকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় অনেক ফিলিস্তিনি আশা করছেন হয়তো হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হবে এবং এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় চলা হামলা বন্ধ হবে।
জাতিসংঘ আবারো সতর্ক করেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন, যেখানে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অল্প খাদ্য এবং নিরাপদ পানীয় জলের মাধ্যমে জীবন চালাচ্ছে।
গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া নারী আমাল আবু হামেইদ বলেন, ‘আশা করি লেবাননের মতো গাজাতেও যুদ্ধবিরতি হবে। কারণ আমি সন্তানদের আমার ভূমি দেখাতে চাই, বাড়ি দেখাতে চাই। ইসরায়েল আমাদের সঙ্গে কী করেছে আমি সেই দৃশ্য দেখাতে চাই। আমরা নিরাপদে বাঁচতে চাই।’
২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনো চলছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ