গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: আমন ধান কাটার পর সেই জমিতে আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাইবান্ধার কৃষকগণ। চলতি মৌসুমে আলুবীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি হলেও চাষে পিছপা না হয়ে বরং একটু বেশি দামে বিক্রয়ের আশায় আলু চাষ করছেন তারা।
বর্তমানে আলু রোপণের জন্য হিমাগার থেকে বীজ সংগ্রহ, জমি প্রস্তুত, সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন কাজে দিনভর ব্যস্ত রয়েছেন চাষিরা। তারা আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করে এখন আলু রোপণ করছেন। উৎপাদিত আলুর বাজার দর ভালো পাওয়ার আশায় দিনরাত আলুর জমি প্রস্তুত ও বীজ রোপণের কাজ করছেন আলু চাষীগণ।
গাইবান্ধার ৭ উপজেলায় আলু রোপণকে কেন্দ্র করে মাঠজুড়ে কৃষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দ্বিগুণ লাভের আশায় মাঠে কেউ জমি তৈরি, কেউ আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ করছে।
জানা গেছে, ধান উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধার কৃষকরা চলতি বছরেও অনেক জমিতে আগাম জাতের রোপা আমন ধান চাষ করেছেন। রোপা আমন কাটার পর ফাঁকা হওয়া জমি ফেলে না রেখে বিভিন্ন জাতের আলুর চাষ করা হচ্ছে।
চাষিরা জমিতে চলতি মৌসুমে গ্রানুলা, হীরা, খুপরি সিন্দুরী, লালপাকরি, ফাটাপাকরি, সূর্যমুখী, আরিন্দা, রাজা, ডায়মন্ড ও কার্ডিনালসহ নানা জাতের আলু রোপণ করছেন। আলুর উচ্চ মূল্যের কারণে চলতি মৌসুমেও ভাল দামের আশায় আলু চাষ বেড়েছে।
তবে ঘরে বীজ সংরক্ষণ না করায় অনেক কৃষক চড়া দামে বীজ ক্রয় করে আলু চাষ করতে হিমসিম খাচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ৭৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু লাগানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে শুধুমাত্র গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাতেই ৫৪৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জে ৪০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু লাগানো হয়েছে। জমিগুলো ত্রি-ফসলী হিসেবে ব্যবহার করেছেন তারা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের নরেঙ্গাবাদ গ্রামের বাবলু মিয়া বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি ফাঁকা ফেলে না রেখে সেই জমিতে আলু চাষ করা হচ্ছে।
বীজ, সারসহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আলু চাষের ব্যয় বেড়েছে। আলুর বর্তমান বাজার দর অব্যাহত থাকলে উৎপাদিত আলু বিক্রয় করে বেশ লাভবান হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, গতবছর গাইবান্ধায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকরা। তারা যাতে কোনো সমস্যা বা ক্ষতির শিকার না হন, সে জন্য তাদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
এবি/এইচএন