উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে চাওয়া শিক্ষারর্থীদের অর্থ আত্মসাৎ ও তাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম কে বাশারের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের দাবি প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গড়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি অর্থ ফেরত চাইলে হামলার শিকার হওয়ারও অভিযোগ করেছেন তারা। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যানের প্রতারণার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. শিহাবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কে ভর্তিবাবদ অর্থ প্রদান করি। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানটি কৌশলে বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি জমা দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু তারা ফি জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে আমরা তা বুঝতে পেরে টাকা ফেরত চাইলে প্রতিষ্ঠানটি টালবাহানা শুরু করে কালক্ষেপণ করতে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয় এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চেক জালিয়াতি ও হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে শিহাব জানান, অর্থ নেওয়ার অনেক দিন পর কর্তৃপক্ষ পাওনাদারকে চেক প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তার নিজের স্বাক্ষরিত চেক প্রদান করেন। তবে ব্যাংক থেকে এই চেক প্রত্যাখ্যান হয়। এ রকম ভুক্তভোগীর সংখ্যা আনুমানিক হাজারের মতো। এ অবস্থায় টাকা উদ্ধারে আমরা থানায় অভিযোগ করি। কিন্তু ন্যায্য বিচার না পাওয়ায় আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে বিএসবির চেয়ারম্যানের গুন্ডাবাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সবশেষ গত ২৭ আগস্ট বিএসবির চেয়ারম্যান বাশারের সঙ্গে পাওনাদারদের এক প্রতিনিধি দলের স্টাম্প পেপারে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে তিনি সমুদয় পাওনা টাকা যথাক্রমে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর ও ২৫ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করার কথা জানান। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধের পর তারা আর অর্থ প্রদান করেনি। এরপর গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। বিষয়টি নিয়ে গুলশান থানা অবগত আছে।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা অর্থ উদ্ধার ও নিরাপত্তার জন্য জিডি, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেন এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় তারা পাওয়ানা টাকা আদায়ে আন্দোলন কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৫ দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো
১. বিএসবি কর্তৃক প্রতারিত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অর্থ জরিমানাসহ ফেরত দিতে হবে।
২. প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠানের কাউন্সিলরদের দেশবাসীর সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩. পরবর্তীতে আর কোনো শিক্ষার্থী যেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আর প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. টিউশন ফি ও ভিসা প্রসেসিংয়ের নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ বিদেশে পাচারের বিষয়টি তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
৫. আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অনতিবিলম্বে সকল ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আমার বাঙলা/ এসএইচ