শীতকাল সমাগত। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে তা। শীতের সকালে কুয়াশা দেখেছি সবাই। গ্রামীণ পরিবেশে ভোরের ঘাসের ঢগায় কুয়াশা যেন কবিতার কোনো পঙক্তি। প্রকৃতি ও জীবন সম্পর্কে এ কুয়াশা অজানা শিহরণ জাগায়। কিন্তু কুয়াশা এখন হয়ে উঠেছে পানীয়ের মূল উপাদান। চিলির উদ্যোক্তা কারকুরো কুয়াশা থেকে তৈরি করেছেন এক ধরনের নতুন বিয়ার। এই অভিনব উদ্যোগ তাকে এনে দিয়েছে প্রশংসা আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
পেনা ব্লাঙ্কা পর্বতের পরিচিতি ‘কুয়াশার মরুদ্যান’ হিসেবে। সেখানে বছরের অধিকাংশ সময়েই কুয়াশা দেখা যায়। কারকুরো জানান, এই জায়গায় বিশেষ আবহাওয়ার কারণে কুয়াশা অনেকটাই ঘন হয়ে থাকে, আর সেখান থেকেই এসেছে তার এই ধারণা। তিনি একটি তিন মিটার উচ্চতার বিশেষ জাল স্থাপন করেছেন পর্বতে, যা কুয়াশার ফোঁটাগুলোকে ধরে ফেলে। এরপর সেই তরল কুয়াশা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয় তার ব্রুওয়ারিতে, যেখানে এটি বিয়ারে পরিণত হয়।
এই বিয়ার একবার দেখলেই চোখ আটকে যাবে এর গাঢ় রঙে। কিন্তু, শুধু রঙ নয়, এর স্বাদেও আছে চমক।
কারকুরো জানালেন, আমরা চাই, এই বিয়ারটিকে এমনভাবে তৈরি করতে, যেন এর স্বাদে পেনা ব্লাঙ্কার মাটি, পরিবেশ, আর মানুষের সংস্কৃতি ধরা পড়ে, ঠিক যেমনটি ওয়াইনের টেরোয়ার থাকে।
তার মতে, এই কুয়াশার পানি একেবারে নরম, যেন প্রায় পাতন করা পানির মতো, কিন্তু এর ভেতরে থাকে কিছু বিশেষ খনিজ, যা এই বিয়ারকে অন্য যে কোনো সাধারণ পানীয় থেকে আলাদা করে।
চিলির এই অভিনব উদ্যোগ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এই বিয়ার শুধুমাত্র এক নতুন পানীয় নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি হওয়া এক গল্প। যেভাবে এই বিয়ার তৈরি হচ্ছে, তা যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি পানীয়প্রেমীদের জন্যও একটা নতুন অভিজ্ঞতা। কারকুরোর এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য উপাদান ব্যবহার করা যায়।
আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে কারকুরোর এই উদ্ভাবন। কুয়াশার এই বিয়ার নিয়ে তিনি বলছেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল কুয়াশার স্বাদকে বোতলে ভরতে, যাতে প্রতিটি সিপে কুয়াশার স্পর্শ পাওয়া যায়।
এই অভিনব উদ্যোগ কেবল চিলির জন্য নয়, সারা বিশ্বের খাদ্য ও পানীয় প্রেমীদের কাছেও কৌতূহলের বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তৈরি এই বিয়ার নতুন স্বাদের সন্ধান দেয়।
আমারবাঙলা/এমআরইউ