কিশোরগঞ্জের নরসুন্ধা নদী এখন ভাগারে পরিণত হয়েছে; যেন দেখার কেউ নাই। শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্ধা নদীতে পৌর এলাকার নিত্য দিনের ময়লা ফেলে ভাগারে পরিণত করা হচ্ছে। এক সময়ের খরস্রোতা প্রমত্তা নরসুন্ধা নদী কালের বিবর্তনে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দখল দূষণে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে। নরসুন্ধা নদী কিশোরগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়াই যেন কাল হল।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর দু'পাশে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন। আর এ বহুতল ভবনগুলো অধিকাংশই নদীর জন্য অভিশপ্ত। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তখন সে দলের প্রভাবশালীদের কলকাঠিতে গড়ে তোলা হয় স্থাপনা। এর সাথে জড়িত রয়েছে প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাগণ। এতে করে নদীর গতিপথ সংকীর্ণ হয়ে তার অস্তিত্ব হারিয়েছে। ২০০৬ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর খনন কাজে হাত দেয়। এ সময় নদীর পাশে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। অনেক দখলদার অবৈধ কাগজ করে হাইকোর্টের রায় নিয়ে দখলদারিত্ব বহাল রাখেন।
এ বিষয়ে সিপিবি নেতা আব্দুর রহমান রুমি বলেন, নদীর জায়গায় গড়ে তোলা ভবন মালিকরা কী সরকারের চেয়েও শক্তিশালী? এক্ষেত্রে সরকারের হয়ে আইনি লড়াইয়ে দুর্বলতা রয়েছে। নদীর পাশে গড়ে ওঠা এসকল ভবন মালিকদের সুয়ারেজ এর পানি নদের পানিকে বিষাক্ত করে ফেলছে। এ ছাড়াও পৌর এলাকায় যতত্রত পশু জবাই করে এর উৎকৃষ্ট ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় নিত্য দিনই নদীতে ফেলা হচ্ছে। শহরের বড় বাজার ব্রীজ সংলগ্ন নদীর পাশ দিয়ে দুর্গন্ধের জন্য হেঁটে যাওয়ারও উপক্রম নেই। এমতাবস্থা কাচারি বাজার ব্রীজ সংলগ্ন এলাকাতেও।
কিশোরগঞ্জ পৌর কর্মকর্তা সাব এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ফারুক আহমেদ জানান, আমাদের একশত ডাস্টবিন তৈরির বাজেট আসছিল। ব্যবসায়ীদের বাঁধার মুখে মাত্র ১০ টি ডাস্টবিন করতে পেরেছি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ- পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, জনগণ সচেতন না হলে আমাদের একার পক্ষে নরসুন্ধা নদীকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আমারবাঙলা/ইউকে