নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজ আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, ৭ নভেম্বর কার দিন? বিএনপির কী দিবস? জাতীয় দিবস? জাতীয় দিবসের কর্মসূচিও স্থগিত করে এই দল। তাদের মতো ভীরু-কাপুরুষদের তো রাজনীতি করা শোভা পায় না।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতেও সাহস পায় না। এ কাপুরুষদের রাজনীতি করা কি মানায়? তাদের আন্দোলন করার সাহস তো এখানেই বুঝা গেল!
সেই বিএনপি এখন কোথায়? লাফালাফি কই গেল? জিয়াউর রহমান রাতের খাবার খেতে খেতে ফাঁসির আদেশ দিতেন। জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরিরা আজ কোথায়? তারা হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চেপে বসেছে।
তিনি বলেন, ২৮ তারিখ চলে গেল। আহারে কত স্বপ্ন। সেই ২৮ তারিখেই শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে যাওয়া টানেল উদ্বোধন করেছেন।
এখন কোথায়? সব পালিয়েছে। নয়াপল্টনে দাঁড়িয়ে তারা বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি পালাচ্ছে, শেখ হাসিনা পালাচ্ছে। তিনি এখন সৌদি আরবে হজ করছেন। আপনারা কে, কোথায়? কেন আজ কারাগারে? যারা কারাগারে, তারা দায় অস্বীকার করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের সাথে মারামারি বাধিয়ে, পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করে, পুলিশের ওপর হামলা করে, সেই সময় মির্জা ফখরুল ভাবলেন, ঘটনা তো খারাপ। তখনই তিনি লাফ দিয়ে নিচে নেমে গেলেন।
গয়েশ্বর বাবু নাই। ওদিকে তাকান, আমীর খসরু নাই। গেটের ভেতর যত নেতা, নোমান সাহেবও নাই। বেচারা দিশেহারা হয়ে দৌড় যে দিছে। ডেমরার সালাউদ্দিনের দৌড়ের চেয়েও দ্রুত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, হ্যান্ড মাইকে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন, তখন পুরো স্টেজ ফাঁকা। ২৮ তারিখ শেখ হাসিনার পতন দেখলেন। আর আপনাদের স্টেজেরই পতন হয়ে গেল।
পালায় অলিগলিতে, ঢাকা শহরের কোনো গলি দিয়ে ঢুকা যায় না, তারা যেভাবে পালাচ্ছে। এখানে পালায়, ওখানে পালায়। যার ঘরে গিয়ে পালায় সে বলে আমি তো আওয়ামী লীগ করি। এ রকম ঘটনা অনেক ঘটেছে।
একটি বাস পোড়াতে পারলে ৩০০০ টাকা করে দেওয়া হবে- বিএনপির এমন ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগুন দিয়ে ফোন দিলেই মোবাইলে ৩০০০ টাকা চলে যাবে। এখন সেটা ডাবল হয়েছে।
কারণ বেশকিছু গাড়ি পুড়িয়েছে, ধরাও পড়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা করতে তাদের নেতারাই শিখিয়ে দিয়েছে।
গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজেই বলেছেন যে, আমি খেয়াল রাখব। অপরাধী ছাড়া কোনো নিরীহ লোক যাতে ধরা না পড়ে। এতে বদনাম হয়। এ বদনাম আমরা ঘাড়ে নেব কেন? অপরাধীদের শায়েস্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল তাতে কিছু আসে যায় না। আমার দেশের আইনে আমার দেশের অপরাধীকে আমি বিচার করতে পারব না। এটা কোন গণতন্ত্র? কোথা থেকে এলো এ আদেশ?
আমার দেশের অপরাধী, আমার দেশের খুনি। অথচ বিচার করতে পারব না, তাকে জেলে পাঠাতে পারব না। আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ তোমাদের নাম্বার ওয়ান জাতীয় দিবস। এটা তোমাদের উত্থান দিবস। সেই দিবস পালন করতে যাদের এতো ভয়, তারা নাকি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করবে? তারা নিজেরাই যথেষ্ট নিজেদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এখানে আওয়ামী লীগকে লাগবে না।
তিনি আরও বলেন, কর্মসূচি কোথায় তাদের? কাল রাত্রে আবাসিক প্রতিনিধি ঘোষণা দিল, কর্মসূচি হবে না। জিয়াউর রহমানের মাজারে যাওয়া হবে না। এ দলের কী করা উচিত? আওয়ামী লীগের এখনো ভয় দেখানোর সময় আসে নাই। সবে শুরু হয়েছে।
আমার তো শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছি। এতেই ৭ নভেম্বর বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকায় কয়েকটা মিছিল হচ্ছে দেখে ভয়ে নিজেদের কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছে। এরা কোন দল? এরা আন্দোলন করতে পারবে? এদের আন্দোলন ভুয়া।
এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
এবি/এইচএন