আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম। পুরো ক্যারিয়ারে পায়ের জাদুতে মাতিয়ে রাখছেন গোটা ফুটবল বিশ্বকে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তেদের বিশ্বকাপ খরা কাটানোর মহানায়কও এলএম টেন।
৩৭ বছরের অপ্রতিরোধ্য আট বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই কিংবদন্তি। ফুটবল থেকে তার চাওয়া আর কিছু নেই। মাঠে যা কিছু জেতা সম্ভব, সবই জিতেছেন তিনি। তার ভক্ত- সমর্থকদের ও নিজেদের প্রিয় তারকার কাছে নেই কোনো চাওয়া। যার কারণ, ক্যারিয়ারের গোধূলীলগ্নে এসে এখন শুধু ফুটবলটাকে উপভোগ করতে চান তিনি।
তবে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফুটবল বিশ্বকাপে আকাশি-নীলদের জার্সি গায়ে দেখা যাবে কিনা মেসিকে। তা নিয়ে তার ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে কাজ করছে উৎকণ্ঠা। এবার মেসি নিজেই খোলাসা করলেন এই বিষয়ে। যদিও ইনজুরির কারণে সর্বশেষ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ব্রাজিল এবং উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলতে পারেননি আলবিসেলেস্তেদের নেতা।
সম্প্রতি ফুটবলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিম্পলমেন্ট ফুটবলকে এক সাক্ষাৎকার দেন লিওনেল মেসি। সেখানে নিজের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন । ২০২৬ বিশ্বকাপে তাকে দেখা যাবে কিনা; এই প্রসঙ্গে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, আপনি যদি এই বিষয়ে চিন্তা করেন, তাহলে এটি অনেক দূর... কিন্তু একই সঙ্গে, সময় খুব দ্রুত চলে যায়। এই বছরটি আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ধারাবাহিকভাবে খেলা এবং শারীরিকভাবে ভালো বোধ করা গুরুত্বপূর্ণ। গত বছর আমি ভালো শুরু করেছিলাম এবং ইনজুরিতে পড়েছিলাম। এই বছর আমি ভালো একটি প্রাক-মৌসুম কাটিয়েছি। আমি ভালো শুরু করেছি এবং এখন পর্যন্ত ভালো বোধ করছি।
জুনে ৩৯ বছরে পা রাখবেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ইন্টার মায়ামির হয়ে দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। ৩৯ বছর বয়সে ফিফা বিশ্বকাপের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্টে তাল মিলিয়ে খেলা সম্ভব কিনা; এই বিষয়ে মেসি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে অনেক খেলা আছে। আমি দেখব আমি কেমন অনুভব করছি, বিশেষ করে শারীরিকভাবে এবং আমি সেখানে থাকার জন্য প্রস্তুত কিনা ।’
২০২২ সালে ১৮ ডিসেম্বরে লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। তার আগে ২৭ নভেম্বর গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল মেসিবাহিনী । সেই ম্যাচে ২-০ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল মেসি, দি মারিয়া, এনজো, মার্টিনেজরা। সেই ম্যাচে ৬৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে পূরপাল্লার শর্টে মেক্সিকোর জালে বল জড়িয়েছিলেন মেসি। জয়ের পর ডেসিংরুমে আলবিলেসেস্তেদের উদযাপনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়। ভিডিওতে দেখা যায়, মেক্সিকান ফুটবলার আন্দ্রেস গুয়ার্দাদোর জার্সি ওপর দাঁড়িয়ে উদযাপন করছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ভিডিওটি নিয়ে জলগোলাও কম হয়নি। মেসিকে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন মেক্সিকান সমর্থকরা। যদিও সেই বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি তিনি। এই ঘটনার পর থেকে আর্জেন্টিনাকে নিজেদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করে আসছেন মেক্সিকানরা।
সিম্পলমেন্ট ফুটবলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টাইন জানান, কখনো কাউকে অসম্মান করেননি তিনি। আর্জেন্টিনার সঙ্গে মেক্সিকোর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই এবং বিষয়টি কোথায় থেকে এসেছে, সেই বিষয়ে কোনো ধারণা নেই তার। বলেন, ‘তারা নিজেদের এমন একটি অবস্থানে ফেলেছে যেখানে আমাদের সঙ্গে এমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, যার আসলে কোনো অস্তিত্ব নেই।’
এ ছাড়া মেক্সিকোর বিপক্ষে সেই ম্যাচ নিয়ে এলএম টেন আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন, আমি কখনো কাউকে অসম্মান করি না। এটি লকার রুমের অংশ। আমি মেক্সিকোর জার্সি বা কাউকে অসম্মান করিনি।’
আমারবাঙলা/এমআরইউ