বাড়ির চারপাশে, বারান্দায়, গাছের ডালে ও কার্নিশে অসংখ্য মৌচাক। প্রথম দেখায় যে কেউ মনে করবেন, এখানে মানুষ থাকেন না; পুরো বাড়িটা যেন মৌমাছির অভয়ারণ্য।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মাপারের চরমহিদাপুর গ্রামের কৃষক রশিদ মোল্লার বাড়ির কথা বলা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, তাদের গ্রামে এত মৌচাক একসঙ্গে আগে কখনো দেখা যায়নি। সম্প্রতি রশিদ মোল্লার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের ঘরের কার্নিশ, বারান্দা, আড়ার কাঠসহ বাড়ির উঠানের মেহগনি, বরই ও কাঁঠালগাছে ছোট-বড় ২৮টির মতো মৌচাক। মৌমাছির ঝাঁক ঘুরে বেড়ালেও তারা কাউকে কামড়ায় না। লোকজন নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
চার থেকে পাঁচ বছর আগে রশিদ মোল্লার বাড়িতে চার থেকে পাঁচটি মৌচাক দেখা যায় বলে জানালেন চরমহিদাপুর গ্রামের আলমগীর মোল্লা, আনোয়ার হোসেন, মানিক শেখসহ কয়েকজন। এখন প্রতিবছরই মৌচাকের সংখ্যা বাড়ছে।
কৃষক রশিদ মোল্লা জানান, তিনি সাধারণ কৃষক। কৃষিকাজ তার মূল পেশা। চার থেকে পাঁচ বছর আগে তার বাড়িতে প্রথম কয়েকটি মৌচাক হয়। এরপর প্রতিবছরই চাকের সংখ্যা বেড়েছে। এখন সব মিলিয়ে ২৮টির মতো মৌচাক আছে। মৌমাছিগুলো প্রতিবছর কার্তিক মাসে আসে, জ্যৈষ্ঠ মাসে চলে যায়। মৌচাকগুলো থেকে ২০ থেকে ২৫ দিন পরপর ১০ থেকে ১৫ কেজি মধু পাওয়া যায়। মৌয়ালরা নেওয়ার পর তিনি ৮ থেকে ১০ কেজি মধু পান। প্রতি কেজি মধু তিনি এক হাজার টাকা করে বিক্রি করেন। খাঁটি মধু হওয়ায় বিক্রি করতে কোনো বেগ পেতে হয় না। এলাকার লোকজন নেন, দূরদূরান্ত থেকে এসেও অনেকে নিয়ে যান।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া এই মধুর গুণমান অনেক ভালো। এ ধরনের মধুর চাহিদাও সবার কাছে অনেক বেশি। মৌমাছিগুলো একেবারে নিরীহ প্রকৃতির, ফলে মানুষ নিরাপদে মধু সংগ্রহ করতে পারছেন। মৌমাছিদের যেন বিরক্ত না করা হয়, সেই পরামর্শ দিয়েছি আমরা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ