বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: দুই ছেলেকে নিয়োগ দিয়েছেন, ভাগ্নিও পেয়েছেন চাকরি। চাকরির নিশ্চয়তায় বড় ছেলের বউও করেছিল আবেদন, তবে সমালোচনা এড়াতে শেষ পর্যন্ত সরে এসেছেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ছাড়াও নিয়োগ, টেন্ডার, একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে এমন একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি)।
সেগুলো আমলে নিয়ে শেকৃবি প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। সেখানে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগগুলোর ব্যাখ্যা চেয়েছে ইউজিসি। পাশাপাশি অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন হচ্ছে।
জানতে চাইলে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে শেকৃবির উপাচার্যের দুর্নীতি বিষয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগও এসেছে। সেগুলোকে আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) শেকৃবি রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেকৃবির জনবল নিয়োগ, টেন্ডার, একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে কমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অভিযোগপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ কমিশনের নজরে এসেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অভিযোগগুলোর বিষয়ে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দফাওয়ারি বক্তব্য কমিশনে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো। নিয়োগ-সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নিয়োগ কার্যক্রমের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিমিত্ত কোনো প্রস্তাব সিন্ডিকেটে উপস্থাপন না করার অনুরোধ করা হলো।
উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রমাণকসহ লিখিত বক্তব্য পাওয়ার পর কমিশনের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হবে।
জানতে চাইলে শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর আগের ঘরের ছেলেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে আমি নিয়োগ দিয়েছি বলে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। ছেলে হামিমের নিয়োগের বিষয়ে বলেন, ওর নিয়োগ বোর্ডে আমি ছিলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সেখানে ছিলেন। এছাড়া বোনের মেয়ের নিয়োগের সময়ও আমি বোর্ডে ছিলাম না। কাজেই স্বজনপ্রীতির অভিযোগগুলো মিথ্যা।’
অন্য অভিযোগগুলোও মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, ‘যারা আমার কারণে অনিয়ম-দুর্নীতি করতে পারেনি, তারাই এসব বলে বেড়াচ্ছে। এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।’
এবি/এইচএন