আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে লড়াই করছে। এমন সংকটের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন এবং আবহাওয়ার ‘এল নিনো’ পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন সংস্থাটির একজন বিশেষজ্ঞ।
ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এপ্রিলে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে ৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে শুধু আগস্টেই ৩শ’ মানুষ মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ।
সংস্থাটির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলো, চাপের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে শয্যা এবং কর্মী সংকটও।
গেব্রেয়াসুস জানান, ডেঙ্গু মোকাবিলায় ‘নজরদারি জোরদার, পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে’ বাংলাদেশ সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে ডব্লিউএইচও।
তিনি বলেন, আমরা চিকিৎসকদের প্রশিক্ষিত করেছি এবং বিশেষজ্ঞদের মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছি। ডেঙ্গু পরীক্ষা এবং রোগীদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও বলছে, বাংলাদেশের সব জেলাতেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই কোটিরও বেশি জনসংখ্যার ঢাকা। যদিও শহরটিতে এখন আক্রান্তের হার স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে।
সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বুধবার পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ১৪ জন। এ সময়ে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ১১৫ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকার রয়েছেন ১০ জন, বাকি ৪ জন ঢাকার বাইরের। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭১ জনে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি ২ হাজার ১১৫ জনের মধ্যে ঢাকায় ৮৩৩ জন এবং ঢাকার বাইরের রয়েছেন ১ হাজার ২৮২ জন। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ২২ জনে।
এদিকে বর্তমানে ৯ হাজার ১২৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৯৪৬ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৫ হাজার ১৮১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ২২৪ জন।
এবি/ওশিন