সংগৃহীত
সারাদেশ

ইঁদুর পালেন লাবণী, বাণিজ্যিক খামার গড়তে চান 

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুর পৌর শহরের বালুচরা এলাকার বাসিন্দা লাবণী আক্তার। পড়াশোনা শেষে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে যখন চাকরি করার কথা ভাবতে থাকেন, তখন আর সুবিধা করতে পারেননি। প্রাণিবিদ্যায় পড়াশোনা করা লাবণীর মাথায় তখন ইঁদুর লালন-পালনের ভাবনা আসে।

এরপর লাবণী লেগে গেলেন ভাবনা বাস্তবায়নে। গত বছর জুন মাসে ঢাকার কাঁটাবন থেকে সুইচ অ্যালবিনো জাতের দুই জোড়া ইঁদুর কিনে আনেন বাড়িতে। একটি ছোট খাঁচায় তা লালন-পালন করতে থাকেন। ২০ দিনের মাথায় দুই জোড়া ইঁদুর ১৮টি বাচ্চা দেয়। আরেকটু বড় পরিসরে ইঁদুর লালন-পালনের আগ্রহের কথা ঢাকায় ব্যবসা করা স্বামী রাকিবুল ইসলামকে জানান। তিনি উৎসাহ দেন। এরপর বাড়ির একটি ঘরে ইঁদুর লালন-পালন শুরু করেন লাবণী।

লাবণী আক্তার বলেন, ‘আমি যখন পড়ালেখা করেছি, তখন আমাদের ল্যাবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হতো ইঁদুর। বেকার জীবন নিয়ে বোর ফিল (বিরক্ত বোধ) করছিলাম। হঠাৎ একদিন মাথায় আসে ইঁদুরের কথা। তখন ঢাকা থেকে দুই জোড়া ইঁদুর সংগ্রহ করি। যখন অল্প সময়ে ইঁদুরগুলো অনেকগুলো বাচ্চা দেয় এবং এগুলো লালন-পালনে ব্যয় ও সময় কম লাগে, তখন বড় পরিসরে লালন-পালনের পরিকল্পনা করি। আট মাসেই বুঝে গেছি, ইঁদুরের লালন-পালন করে ভালো আয় করা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন গবেষণাগারে ইঁদুরের ব্যাপক চাহিদা। তাই পরিকল্পনা করছি বড় আকারে খামার গড়ে তুলব।’

লাবণী জানালেন, বর্তমানে তার খামারে বাচ্চা দেওয়ার মতো ইঁদুর আছে ৮০টি। আর বিক্রি করার মতো ইঁদুর আছে ২৮০টি। দুই থেকে আড়াই মাস বয়স হলেই ইঁদুর বাচ্চা দেয়। একটি মা ইঁদুর একসঙ্গে ১০ থেকে ২০টি বাচ্চা দেয়। প্রতি এক মাস পরপর ইঁদুর বাচ্চা দেয়। প্রতি এক মাস পরপর ৮০ গ্রাম থেকে ১০০ গ্রাম ওজন হলেই ইঁদুর বিক্রি করা শুরু করেন। এই ওজন ও বয়সের একেকটি ইঁদুর ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়।

প্রতিদিন সকালে ইঁদুরগুলোকে ধান, গম ও ভুট্টা মিশ্রিত খাবার দেওয়া হয় বলে জানান লাবণী আক্তার। এরপর রাতে পরিবারের সারা দিনের উচ্ছিষ্ট খাবারগুলো একসঙ্গে করে খিচুরির মতো করে তৈরি করে সেই খাবার খাওয়ান। একেকটি ইঁদুরের জন্ম থেকে বিক্রির আগ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ টাকার খাবার ও ওষুধ লাগে।

লাবণী নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল আকাশের মাধ্যমে ইঁদুর বিক্রি করেন। এখন পর্যন্ত ৩৫০টি ইঁদুর বিক্রি করেছেন। আবদুল্লাহ আল আকাশ বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, মেডিক্যাল কলেজে, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে ও ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানির ল্যাবে ইঁদুর প্রয়োজন হয়। আমি সেসব জায়গায় ইঁদুর সরবরাহ করি।

লাবণীর স্বামী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘দুই সন্তান ও মা–বাবাকে নিয়ে লাবণী গ্রামে থাকে। তার আগ্রহে বাড়ির একটি কক্ষে ইঁদুরের খামার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বড় করে খামার করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির স্বপ্ন আমার স্ত্রীর। যেহেতু এটি লাভজনক ব্যবসা, তাই আমরাও তার উদ্যোগে সায় দিয়েছি।’

আমারবাঙলা/এমআরইউ

Copyright © Amarbangla
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কটিয়াদীতে সূর্যমুখী চাষে কৃষক ইফরানের মুখে হাসি          

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার হালুয়াপাড়া গ্রামের মোঃ ইফরান এক বিঘা জমিতে সূর...

কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে কলেজছাত্রীর মৃত্যু, আহত পাঁচজন

কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে মাইক্রোবাস, সিএনজি ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে আফসানা...

চৌদ্দগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষে ১৩ জন আহত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আল করা ইউনিয়নে ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জা...

গৃহবধূ তানিয়া হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার 

সোনাগাজীতে লাইলী আক্তার তানিয়া নামে এক প্রবাসির স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় প্রধান...

মেট্রোরেলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার

মারধরে জড়িত এমআরটি পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস...

মুসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন ৫৫০ বছরের পুরোনো মসজিদ

দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার চৌরগাছা গ্রামে অবস্থিত শুরা মসজিদ বাংলাদেশের অ...

পরকীয়া প্রেমিকা খুনের দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় পরকীয়া প্রেম বিরোধে স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে হত্যাকান্...

এফডিআর এর টাকা উঠাতে না পেরে  ব্যাংক কর্মকর্তাকে লাঞ্চিত

ফেনী শহরের একাডেমি রোডের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের উপশাখায় চাহিদা অনুযায়ী টাকা...

সীমান্তে আটক বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত দিল বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারে ভারতীয় অংশে আটক আলমগীর শেখ নামে এক বাংলাদেশি জ...

ঋতুরাজ বসন্তে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিমুল

ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে বাংলার প্রকৃতি লাল-হলুদের বাহারে সেজেছে। গাছে গাছে পলাশ,...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
খেলা