আলুবীজ উৎপাদনে খরচ হয়েছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা। কিন্তু চলতি মৌসুমে ২৬ টাকা দরে বিক্রি করে লোকসানের মুখে আছেন চাষিরা। গত বছর গ্রেড অনুযায়ী আলুবীজের দাম ছিল ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ টাকা। বিএডিসি উৎপাদিত আলুবীজ এ বছর কেজিপ্রতি ২৬-২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দাম কমার কারণে উৎপাদন খরচও উঠবে না বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকেরা। আলুবীজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার চুক্তিভিত্তিক আলুচাষিরা মানববন্ধন করেছেন। তারা বলছেন, দাম কমানো অযৌক্তিক। গত বছরের দামের চেয়ে ৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দর ৪০ টাকা নির্ধারণ করলে যৌক্তিকতা থাকতো। এতে উৎপাদন খরচ ও কৃষকের শ্রমের ন্যায্যতা বজায় থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া শহরের বিসিক শিল্প এলাকায় বিএডিসি আলুবীজ হিমাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন চাষিরা। সংবাদ সম্মেলনে কৃষক প্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, চলতি মৌসুমে বিএডিসি উৎপাদিত আলুবীজের মূল্য গ্রেডভেদে কেজিপ্রতি মাত্র ২৬-২৮ টাকা নির্ধারণ করেছে, যা উৎপাদন ব্যয়ের চেয়েও কম। এতে কৃষকেরা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে আছেন।
চাষিদের পক্ষে বেলাল আকন্দ বলেন, আলুবীজের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ সার, বীজ, কীটনাশকসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে। আমরা উৎপাদন করেছি কেজিপ্রতি প্রায় ৩০ টাকা, সেখানে ২৬-২৮ টাকায় বিক্রি করতে বলা হচ্ছে। গত মৌসুমে আমরা বিএডিসি থেকে বীজ কিনেছি ৪৫-৪৬ টাকা দরে। এবার বেড়ে হয়েছে ৫৮, ৬২ ও ৭২ টাকা। অথচ উৎপাদিত বীজ লোকসান করে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কৃষকেরা জানান, চুক্তিভিত্তিক চাষে আলুবীজ উৎপাদনে ঝুঁকি বেশি, কিন্তু ফলন কম। খাওয়ার আলুর চেয়ে প্রতি একরে ফলন কমে প্রায় ৯০ মণ পাওয়া যায়। এরপরও যদি ন্যায্যদাম না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে বীজ উৎপাদনে অনীহা থাকবে। বিএডিসির নিজস্ব বীজ উৎপাদন কর্মসূচি হুমকির মুখে পড়বে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষকের আকুতি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়।
এ ব্যাপারে বিএডিসি হিমাগার বগুড়ার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকের উৎপাদিত আলুবীজে লোকসান হচ্ছে উল্লেখ করে দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করা হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
আমারবাঙলা/ইউকে