মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে ৬৮ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার গোলে স্বাগতিক উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরো মজবুত করলো আর্জেন্টিনা।
শুধু তাই নয়, দলটি দেখা পেয়েছে ২০০০তম গোলেরও। আলমাদার গোলটি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল। ১৯০২ সালের জুলাইয়ে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোলটি এই মন্টেভিডিওতে, এই উরুগুয়ের বিপক্ষেই!
এখন ১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিওনেল স্কালোনির দল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ইকুয়েডর। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ব্রাজিলের বিপক্ষে আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। আর মাত্র ১ পয়েন্ট পেলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হবে স্কালোনির দলের। অর্থাৎ ব্রাজিলের বিপক্ষে ড্র করলেই হবে। যদিও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার কথা নয় স্কালোনির দলের।
তার আগে প্রস্তুতিটা একদম খারাপ হলো না আর্জেন্টিনার। যদিও আলমাদার গোলটি ছাড়া তেমন আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। চোটের কারণে লিওনেল মেসি, লাওতারো মার্তিনেজ, পাওলা দিবালাদের অনুপস্থিতি তার অন্যতম কারণ। প্রায় ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে স্বাগতিক উরুগুয়েও তেমন ভালো খেলতে পারেনি। বলার মতো আক্রমণই তৈরি করতে পারেনি মার্সেলো বিয়েলসার দল। আর্জেন্টিনাও শেষ বাঁশি বাজার পর ১১ জন নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। যোগ করা সময়ে ৫ মিনিটের মাথায় ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জিউলিয়ানো সিমিওনের বদলি নামা নিকো গঞ্জালেস।
সেন্টিনারিও স্টেডিয়ামের মাঠ নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। স্বাভাবিক পাসিং ফুটবল খেলতে পারেনি দুই দল। আক্রমণভাগে আলভারেজকে সামনে রেখে বাঁয়ে আলমাদা ও ডানে সিমিওনেকে খেলান আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি। মিডফিল্ডে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও এনজো ফার্নান্দেজ। তাদের ভেতর দিয়ে প্রথমার্ধে পাস খেলেছে উরুগুয়ে মিডফিল্ড। অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে চূড়ান্ত পাসটা খেলতে না পারায় গোলমুখ খুলতে পারেনি উরুগুয়ে। গোটা ম্যাচে মাত্র চারটি শট নিতে পেরেছে।
প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার খেলা দেখে বিরক্তও লাগতে পারে। উদ্দেশ্যহীন আক্রমণে উঠে বল হারিয়েছে বেশি। এর মধ্যেই আধঘণ্টার মাথায় সিমিওনের পাস থেকে ফার্নান্দেজের শটে দারুণ একটি সেভ করেন উরুগুয়ে গোলকিপার রসেট।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ফার্নান্দেজের একটি ফাউল নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে লেগে গিয়েছিল। ধাক্কাধাক্কি ছাড়াও কথা–কাটাকাটি হয়েছে।
বিরতির পর জেগে ওঠার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। আলমাদা আরেকটু জায়গা নিয়ে খেলতে শুরু করেন। তার ও সিমিওনের প্রচেষ্টা রুখে দেন রসেট। আলমাদাকে ওয়ান অন ওয়ান পরিস্থিতিতে গোল করতে দেননি।
যোগ করা সময়ে উরুগুয়ে মিডফিল্ডার নাহিতান ন্যান্দেজকে বাজে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ৬৯ মিনিটে সিমিওনের বদলি নামা গঞ্জালেস। পেছন থেকে বল কাড়তে গিয়ে ন্যান্দেজের মুখে বুট দিয়ে আঘাত করেন।
ম্যাচে ১২টি শট নিয়ে ৪টি শট উরুগুয়ের পোস্টে রাখতে পেরেছে আর্জেন্টিনা। দুই দলই সমান ১১টি করে ফাউল করেছে। এ জয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে এবার বাছাইয়ে হারের শোধও নিল আর্জেন্টিনা। ২০২৩ সালের নভেম্বরে বুয়েনস এইরেসে গিয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে এসেছিল উরুগুয়ে। এবার উরুগুয়ের রাজধানীতে গিয়ে জিতে এল আর্জেন্টিনা।
আমারবাঙলা/এমআরইউ