মাঠে ব্রাজিলিয়ান রেফারি অ্যান্ডারসন দারোঙ্কোর প্রতি আঙুল উঁচিয়ে কিছু একটা বললেন লিওনেল মেসি। বোঝা যাচ্ছিল, রেফারির কোনো একটি সিদ্ধান্ত ভালো লাগেনি। আসুনসিওনের দেল চাকো স্টেডিয়ামে আজ সেই কাণ্ডই ঘটিয়েছে প্যারাগুয়ে।
১১ মিনিটে লাওতারো মার্তিনেজের বাঁ পায়ের ফিনিশিংয়ে আর্জেন্টিনাই এগিয়ে গিয়েছিল ম্যাচে। কিন্তু মাত্র ৮ মিনিটের জন্য। পরের মুহূর্তটি ম্যাজিক! আন্তোনিও সানাব্রিয়ার চোখধাঁধানো বাইসাইকেল কিকে করা গোলে সমতায় ফেরে প্যারাগুয়ে। স্বাগতিকদের এই স্বস্তিকে আনন্দে রূপ দেন ওমর আলদেরেতে। ৪৭ মিনিটে তার হেডে এগিয়ে যায় প্যারাগুয়ে। লিওনেল মেসি পুরো সময় মাঠে থাকার পরও আর্জেন্টিনা আর পারেনি। ২-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লিওনেল স্কালোনির দল।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের একটি সংস্করণে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাকে হারাল প্যারাগুয়ে। গত সেপ্টেম্বরে এই দেল চাকো স্টেডিয়ামেই তাদের কাছে হেরেছে ব্রাজিল। ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইয়েও ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল প্যারাগুয়ে।
পিছিয়ে পড়ে ৬৯ মিনিটে ম্যাচে ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। বাঁ প্রান্ত থেকে হুলিয়ান আলভারেজের দূরপাল্লার পাস পান রদ্রিগো দি পল। ডান প্রান্ত দিয়ে ফাঁকা পেয়ে ছুটে বল নিয়ে বক্সেও ঢুকে পড়েন। কিন্তু প্যারাগুয়ে গোলকিপার গাতিতো ফার্নান্দেজকে একা পেয়েও বল মারেন পোস্টের ওপর দিয়ে। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে মেসির ক্রস থেকে ভ্যালেন্তিন কাস্তেয়ানোসের হেড একটুর জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। পিছিয়ে পড়ে এমন আরও কিছু সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। মেসিকেও দেখা যায়নি তার চেনা রূপে।
তবে শুরুটা দারুণ করেছিলেন মার্তিনেজ। এনজো ফার্নান্দেজের থ্রু পাস পেয়ে বাঁ প্রান্তে অফ সাইড ফাঁদ কেটে ঢুকে পড়েন বক্সে। বাঁ পায়ের শটে গোল করতে অসুবিধা হয়নি ইন্টার মিলান স্ট্রাইকারের। আর্জেন্টিনার হয়ে এ নিয়ে ৬৯ ম্যাচে ৩১ গোল করলেন মার্তিনেজ।
কিন্তু ১৯ মিনিটের মাথায় সানাব্রিয়ার ম্যাজিক জাগিয়ে তোলে দেল চাকো স্টেডিয়ামের দর্শকদের। ডান প্রান্ত থেকে গুস্তাভো ভেলেজকুয়েজের ক্রস বক্সে আড়াআড়িভাবে পেয়ে যান তুরিনো ফরোয়ার্ড। তার বাইসাইকেল কিকে করা গোলটি দর্শকেরা মনে রাখবেন বহুদিন।
বিরতির পর ৪৭ মিনিটে ডিয়েগো গোমেজের ফ্রি–কিক থেকে হেডে গোল করেন আলদেরেতে। দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে দ্বিতীয় দল হিসেবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম গোল হজম করেও জিতল প্যারাগুয়ে। ২০০৭ সালে প্রথম দল হিসেবে এভাবে জিতেছিল কলম্বিয়া।
দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে ১১ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা। ১০ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে কলম্বিয়া। ভেনেজুয়েলার মাঠে ১-১ গোলে ড্র করা ব্রাজিল ১১ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়। বলিভিয়াকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে ইকুয়েডর। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে এসেছে দলটি। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট পেলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ছয়ে প্যারাগুয়ে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে শীর্ষ ছয় দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে। সপ্তম দলটিকে খেলতে হবে প্লে–অফ। আগামী বুধবার সকালে বাছাইপর্বে এ বছর নিজেদের শেষ ম্যাচে পেরুর মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।
.
আমার বাঙলা/এসএইচ