নিজস্ব প্রতিবেদক: রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে আবারও এলো পবিত্র মাহে রমজান। শুরু হলো সংযম-সাধনা, আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও তাকওয়া অর্জনের মাস। রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অসীম রহমত ও বরকত নিয়ে আসে।
মহান আল্লাহর যতগুলো শরিয়ত নাজিল করেছেন, তার প্রতিটিতেই ছিল সিয়াম সাধনা অবশ্য পালনীয় কর্তব্য ও ফরজ। তাই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বসুরীদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।
রমজান মাসের অন্যতম প্রধান ইবাদত হলো রোজা রাখা। শরিয়তের ভাষায় রোজা হলো, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার, যৌনকর্ম এবং আল্লাহ ও তার রসুলের নিষিদ্ধ যাবতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা।
এ মাস মুসলিম উম্মাহর শ্রেষ্ঠতম পবিত্র মাস। রমজানে সকল মুসলমানকে নিয়ে আসে এক বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায়। এক নাগাড়ে ৩০ দিন ৭২০ ঘণ্টার কঠিন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি করা হয়।
শেষ রাতে ‘সেহরি’ খাওয়া, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও অন্যান্য নিষিদ্ধ কর্ম থেকে বিরত থাকা, সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা, তারপর রাতে ‘তারাবি’ নামাজে অতিবাহিত করা। এভাবে দীর্ঘ ৩০টি দিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রশিক্ষণ চলে।
এ প্রশিক্ষণ হলো আল্লাহর প্রতি আশরাফুল মাখলুকাত মানব সন্তানদের পরম আনুগত্য, সংযম, ত্যাগ, তিতিক্ষা ও আন্তরিকতার অনুশীলন। রমজান মাসে মুমিন বান্দার জন্য বিশেষ পুরস্কার হলো ইবাদতের সহজতার জন্য আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে পুরো মাস বন্দি করে রাখেন।
রাসূল (সা.) বলেছেন, রমজান এলে এর প্রথম রাত থেকে শয়তান ও অবাধ্য জিনদের শৃঙ্খলিত করে রাখা হয় এবং জাহান্নামের সব কটি দুয়ার রুদ্ধ করে দেয়া হয়।
এ সময় জান্নাতের সব কটি দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। একজন ফেরেস্তা ঘোষণা করতে থাকেন, হে কল্যাণকামী অনুসন্ধানী! তুমি অনুসন্ধান কর ও এগিয়ে চল। অকল্যাণকামী পাপাত্মাদের বলতে থাকেন, তুমি থাম। (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করা সুন্নত। এ ১০ দিনের মধ্যে একদিন মহাপুণ্যময় একটি রাত রয়েছে। রাতটিকে লাইলাতুল কদর বলা হয়।
অনেকের মতে, রমজানের ২৭ তারিখের রাত লাইলাতুল কদর। আবার কারও কারও মতে, শেষ ১০ দিনের যেকোনো বেজোড় রাত।
এ বিষয়ে রাসুল সা. বলেছেন, লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ ১০ দিনে অনুসন্ধান কর। তাই আমাদের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এ রাতগুলো মহিমাময় রাত মনে করে এবাদত করা উচিত।
হাদিসে বলা হয়, হাজার রাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ এ পবিত্র রাত লাইলাতুল কদরের রাত পেয়েও যে ব্যক্তি তাকে কাজে লাগাতে বা পরিপূর্ণ মর্যাদা দিতে পারল না, সে বঞ্চিত হলো দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণকামী কাজ থেকে। তার মতো দুর্ভাগা কেউ নেই। (ইবনে মাজাহ)
এবি/এইচএন