আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের একটি হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর বিমান হামলা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার (৪ নভেম্বর) ইসরাইল বাহিনী এ হামলা চালায় বলে জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
এ হামলার দায় স্বীকার করে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা একটি অ্যাম্বুলেন্সকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। কারণ অ্যাম্বুলেন্সটি হামাসযোদ্ধারা ‘সন্ত্রাসী সেল’ হিসেবে ব্যবহার করছিল এবং অ্যাম্বুলেন্সটি তারা অস্ত্র ও যোদ্ধা আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এ ছাড়া হাসপাতাল গেট থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে আনসার স্কোয়ারসহ একাধিক স্থানে অ্যাম্বুলেন্সের বহরের ওপর হামলা করেছে তারা।
এদিকে হামাসের এক কর্মকর্তা ইজ্জত এল রেশিক দাবি করেছেন ওই অ্যাম্বুলেন্সে কোনো হামাসযোদ্ধা ছিল না। অন্যদিকে ইসরাইলও তাদের দাবির (অ্যাম্বুলেন্সে হামাসযোদ্ধা ছিল) পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। আইডিএফ বলেছে, এটি একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এই এলাকার বাসিন্দারের আমরা বারবার দক্ষিণের দিকে সরে যেতে বলেছি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এই ভিডিওতে দেখা গেছে, শহরের রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের পাশে রক্তাক্ত মানুষ পড়ে আছে। তাদের উদ্ধার করতে ছুটে আসছে অন্য মানুষরা।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনটি অ্যাম্বুলেন্স একটি লাইনে দাঁড়িয়ে আছে এবং অ্যাম্বুলেন্সগুলোর পাশে অনেক মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, অ্যাম্বুলেন্সে হামলার খবর শুনে হতবাক হয়েছি। অসুস্থ মানুষ, স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসা সুবিধাকে অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে।
ইসরাইল বরাবরই আল-শিফা হাসপাতালকে হামাসের কমান্ড সেন্টার ও টানেলের প্রবেশপথ গোপন করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। আইডিএফ গত মাসে উত্তর গাজার সব বেসামরিক মানুষদের দক্ষিণের দিকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। এর পর গত বৃহস্পতিবার গাজা সিটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলার দাবি করে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী।
তবে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বেসমারিক লোকদের দক্ষিণে সরে যেতে বললেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলেও বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালায়। এর পর থেকে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত ২২ হাজারের বেশি।
ইসরাইলি বাহিনী গাজায় এখনো অনবরত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে হু হু করে বাড়ছে ফিলিস্তিনের বেসামরিক মানুষের হতাহতের সংখ্যা।
এবি/এইচএন