কলম্বিয়ার আমাজন জঙ্গলের ছোট শহর ইনিরিদা। এর বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সী কারিয়ানিলকে নিয়ে হাসাহাসি করতেন তার আত্মীয়-স্বজনরা। কারণ, তিনি একটি ফুল গাছের চাষ করতেন, যা অনেকের চোখে আগাছা। কিন্তু কারিয়ানিল কখনো হাল ছাড়েননি। আজ এই ‘আগাছা’ ফুলের নামই হয়ে গেছে ‘ইনিরিদা’। এক সময়ের ছোট্ট ফুলটি এখন কলম্বিয়ার গর্ব; এমনকি জাতিসংঘের প্রতীক।
কারিয়ানিলের যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রায় ১০ বছর আগে। তিনি তখন এই অদ্ভুত, নকশাদার ফুলটিকে নিজের জমিতে চাষ করা শুরু করেন। ফুলটি দেখতে বেশ অস্বাভাবিক, তার পাঁপড়িগুলো এমনভাবে সাজানো যে মনে হয় যেন তীক্ষ্ণ কোনো ধারালো অস্ত্র। তার আত্মীয়-স্বজন তখন ভাবতেন, এমন ফুল চাষ করে কিছুই হবে না। তবে কারিয়ানিল তাতে থেমে থাকেননি। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, এই অদ্ভুত ফুলটির মধ্যে এমন কিছু আছে যা সবার নজর কাড়তে পারে।
আজ কারিয়ানিল তার ইনিরিদা ফুলের চারা রফতানি করছেন আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার মতো দেশে। ২১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর সময়ে কলম্বিয়ার কালি শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘের বায়োডাইভারসিটি সম্মেলন। এই ফুলকেই সম্মেলনের প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই ফুলটি এখন কলম্বিয়ার পরিবেশ, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির অনন্য নিদর্শন।
আসলে, কলম্বিয়ার আমাজন অঞ্চল অনেক রহস্য ও জীববৈচিত্র্যে পূর্ণ। ইনিরিদা ফুল সেখানে নতুন সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুলটি কেবল কলম্বিয়ার অর্থনীতির ক্ষেত্রে নয়, পরিবেশ সুরক্ষার জন্যও বড় ভূমিকা রাখছে। ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় উপজাতিরা এই ফুলের মাধ্যমে করছেন অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সেই সঙ্গে সংরক্ষিত হচ্ছে স্থানীয় প্রকৃতিও।
আমারবাঙলা/এমআরইউ